পেটের চর্বি কমানোর কার্যকারী উপায়

শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির কার্যকারী উপায়পেটের চর্বি কমানোর কার্যকারী উপায় সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। পেটের চর্বি নিয়ে চিন্তা নেই এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। বর্তমান সময়ে পেটের চর্বি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পেটের-চর্বি-কমানোর-কার্যকারী-উপায়
 আপনারও কি পেটে মেদ জমেছে? আপনি কি পেটের চর্বি কমানোর উপায় খুঁজছেন? পেটের চর্বি কিভাবে কমানো যায় সে সম্পর্কে যদি জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। চলুন জেনে নেয়া যাক পেটের চর্বি কিভাবে কমানো যায়।

পেজ সূচীপত্রঃ পেটের চর্বি কমানোর কার্যকারী উপায়

পেটের চর্বি কমানোর কার্যকারী উপায়

পেটের চর্বি কমানোর কার্যকারী উপায় সম্পর্কে জানার আগ্রহ বেশিরভাগ মানুষের। কেননা এখনকার সময় বেশিরভাগ মানুষেরই পেটের মেদ জমেছে। আর সেই মেদ বা চর্বি কমানোর জন্য সকলেই উপায় খুঁজছেন। কেননা পেটের মেদ বা চর্বির কারণে অনেকেই তাদের পছন্দের পোশাকগুলো পড়তে পারেনা। নিজেকে দেখতে একদম বিশ্রী মনে হয়। সকলের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করতে বিব্রত লাগে। পেটের এই চর্বির কারণে আমাদের হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়।

পেটের চর্বি কমানোর উপায় জানার আগে আমাদের আগে জানতে হবে আমাদের পেটে আসলে চর্বি জমে কেন? পেটে চর্বি জমার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। যেমনঃ অপর্যাপ্ত ব্যায়াম, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, কম ঘুম, স্ট্রেস এবং বংশগত কারণ। এগুলোর কারনে মূলত আমাদের পেটে চর্বি জমে। আসুন আমরা এখন আমাদের পেটে জমাকৃত চর্বি কিভাবে কমাবো বা এর উপায় কি সে সম্পর্কে জেনে নিই।সকালে ঘুম থেকে উঠে আমাদের প্রথমে পানি পান করতে হবে।ঘুম থেকে উঠে পানি পান আমাদের শরীরকে হাইড্রেট করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে সকালবেলা এক গ্লাস অথবা ২ গ্লাস পানি পান করলে আপনাকে সারাদিন এনার্জি ঠিক রাখবে। আপনি রাতে যে আসিড ভিজিয়ে রেখে সকালে সে পানিও পান করতে পারেন। আবার সকাল বেলায় হালকা কুসুম পানিতে লেবুর রস দিয়েও পানি পান করতে পারেন।সকালে এরকম পানি খাওয়ার অভ্যাস আমাদের শরীরকে শুধু হাইড্রেটিং করবে না এটি আমাদের হজম শক্তিকেও উন্নত করবে। তবে কারো যদি গ্যাসের সমস্যা থাকে তাহলে সকালে লেবু পানি না খাওয়াই ভালো।

প্রতিদিন মেডিটেশন করুন। মেডিটেশন স্ট্রেস কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর আপনার স্ট্রেস কম হলে  পেটের চর্বি কমতেও সাহায্য করবে। সকালের নাস্তা হতে হবে প্রোটন সমৃদ্ধ। সারাদিনের খাবারের নিয়ম হচ্ছে সকালবেলা ভালোভাবে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। তাহলে সে খাবার থেকে সারাদিন এনার্জি পাওয়া যাবে এবং হজম প্রক্রিয়া ভালো হবে। সকালের নাস্তায় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকবে ফলে বারবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা সম্ভব যা পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।

প্রতিদিন পর্যাপ্ত ব্যায়াম করতে হবে। প্রতিদিন ব্যায়াম করলে শরীর সুস্থ থাকে এবং পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে। প্রতিদিন ব্যায়াম করার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হবে। ফাইবার যুক্ত খাবার খেলে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে ফলে ক্ষুধা কম লাগে যা পেটের চর্বি কমাতে সহায়ক। আর পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে অনেক সময় পেটের চর্বি বেড়ে যায়। কেননা ঘুম না হলে স্ট্রেস বাড়ে আর স্ট্রেস বাড়লে পেটের চর্বি বাড়ে।

মহিলাদের পেটের চর্বি কমানোর উপায়

মহিলাদের পেটের চর্বি কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। মেয়েরা যখন মহিলাতে পরিণত হয় তখন তাদের পেশী আস্তে আস্তে কমতে থাকে এবং পেটে চর্বি জমতে থাকে। এটা হওয়ার কারণ হচ্ছে তাদের শরীরে ইস্টোজেন হরমোন কমে যায়। ফলে পেটে চর্বি জমে। এরকম বয়সে এসে মহিলারা চলাফেরা কম করে তাই তাদের কোমরের আশেপাশে বিশেষ করে পেটে চর্বি জমে যায়।

খাবার অভ্যাস পরিবর্তনঃ মহিলাদের বেশিরভাগ দ্রুত খাওয়ার অভ্যাস থাকে। খাবারের অভ্যাসের কারণে অনেক সময় পেটে চর্বি জমে। খাবার সময় আমাদের পাকস্থলী মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায় আমাদের পেট পূর্ণ হয়েছে কিনা। এই প্রক্রিয়াটা ধীরে ধীরে হয় কিন্তু আমরা যদি তাড়াহুড়ো করে খায় তাহলে মস্তিষ্কে সংকেত পৌঁছানোর আগে আমাদের অনেক বেশি খাওয়া হয়ে যায় যা আমাদের পেটের চর্বি বাড়াতে সাহায্য করে। তাই আমরা যদি পেটের চর্বি কমাতে চায় তাহলে ধীরে ধীরে মনোযোগ দিয়ে খাবার খেতে হবে।

আরো পড়ুনঃ টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

সঠিক নিয়মে খাবার খাওয়াঃ মহিলারা অনেক সময় কাজের চাপে খাবার সঠিক নিয়মে খায় না। কাজ করতে করতে সকালের খাবার গিয়ে দুপুরে খাই এবং এভাবে খাবার খেলে পেটে বেশি ক্ষুধা থাকাই বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলে ফলে পেটের চর্বি জমে। পেটের চর্বি কমাতে হলে সঠিক নিয়মে যে বেলার খাবার তখনই তা খেতে হবে তাহলে অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগবে না তাহলে পেটে চর্বি জমার সম্ভাবনা কমে যাবে।

নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবেঃ সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সে মহিলারা নিয়মিত শরীর চর্চা করে না এজন্য তাদের শরীরে অর্থাৎ পেটে বেশি চর্বি জমে। আপনি যদি আপনার পেটের চর্বি কমাতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটতে হবে। এভাবে প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটলে আপনার পেটের যে চর্বি রয়েছে তা ধীরে ধীরে কমে যাবে এবং অতিরিক্ত চর্বি জমতে বাধা দিবে।

পেটের চর্বি কমানোর সবজি

পেটের চর্বি কমানোর সবজি সম্পর্কে আমাদের সকলেরই ধারণা থাকা উচিত। কেননা এখনকার সময় বেশিরভাগ মানুষেরই পেটে চর্বি জমছে। তাই কোন কোন সবজি খেলে আমাদের পেটের চর্বি কমবে সে বিষয়ে যদি আমাদের ধারণা থাকে তাহলে আমরা সেসব সবজি খেয়ে পেটের চর্বি কমাতে সক্ষম হবো।তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক কোন কোন সবজি খেলে  পেটের চর্বি কমানো যাবে।

পেটের-চর্বি-কমানোর-কার্যকারী-উপায়

  • ব্রোকলিঃ ব্রকলি একটি গাঢ় ও সবুজ ধরনের সবজি। এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। ব্রকলিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা শরীরের চর্বি কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। আপনি যদি ব্রকলি প্রতিদিন অল্প আছে সিদ্ধ করে খেতে পারেন তাহলে এটা আপনার শরীরের জন্য খুবই পুষ্টিকর হবে এবং চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।
  • গাজরঃ গাজর ও একটি পুষ্টিকর সবজি। গাজরে লুটিন নামক একটি উপাদান রয়েছে যা এ্যান্টি- অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে। গাজর চিবিয়ে খেলে শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া সক্রিয় থাকে ফলে এটি চর্বি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • লেটুস পাতাঃ লেডিস পাতায় একটি পাতা জাতীয় সবজি এতেও রয়েছে লুটিন উপাদান যা পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
  • বিট রুটঃ এটি একটি মূল জাতীয় সবজি যা খুবই পুষ্টিকর এবং আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
  • পালং শাকঃ পালং শাক একটি সবুজ রঙের শাক। এটি আপনি সালাদ করে বা রান্না করেও খেতে পারেন। এতে রয়েছে ভিটামিন কে যা ওজন কমাতে এবং পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে ফাইবার যা হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।

পরিশেষে বলা যায় যে, আপনি যদি উপরোক্ত সবজিগুলো নিয়মিত সঠিক নিয়মে খেতে পারেন তাহলে সেগুলো আপনার পেটের চর্বি কমানোর ক্ষেত্রে কার্যকারী ভূমিকা পালন করবে। এগুলো সবই প্রাকৃতিক জিনিস যার কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই আপনি শুধু সঠিক নিয়মে খেলেই উপকার পাবেন।

পেটের চর্বি কমানোর ঘরোয়া উপায়

পেটের চর্বি কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে যদি আমাদের জানা থাকে তাহলে পেটের চর্বি কমাতে সুবিধা হবে। পেটে চর্বি জমা এটি একটি সার্বজনীন সমস্যা। আর এ সমস্যার জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী। কেন না আমাদের লাইফস্টাইল এর কারনে আমাদের বেশিরভাগ মানুষের পেটে চর্বি জমে থাকে। তবে কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে পেটের চর্বি বা শরীর স্বাস্থ্য জেনেটিক্যাল হয়। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক আমরা কিভাবে ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমে এ সমস্যা থেকে উদ্ধার হতে পারি।

  • আপনি যদি পেটের মেদ কমাতে চান তাহলে অবশ্যই প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস খেতে পারেন। যদি কারো শুধু লেবুর রস মেশানো পানি খেতে অসুবিধা মনে হয় তাহলে সাথে একটু মধুও দিতে পারেন।
  • রাতে ভিজিয়ে রাখা জিরা পানি সকালে উঠে হালকা কুসুম গরম করে চায়ের মত করে খেতে পারেন এতেও আপনার পেটের চর্বি কমাতে উপকার হবে। এ জিরা পানি শুধু আপনার চর্বি কমাতে সাহায্য করে এমন নয় এটি হজমেও সাহায্য করে।
  • প্রতিদিন সকালে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। কেননা প্রোটিন আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ শক্তি যোগায়। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার সকাল বেলায় খেলে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে ফলে কি রকম লাগে এবং বেশি খাবারের চাহিদা কম থাকে ফলে এটি আপনার চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।
  • শস্য জাতীয় খাবার খেতে হবে। কেননা শস্য জাতীয় খাবারের ফাইবার থাকে যা আমাদের পেট ভরা রাখে এবং খাবার চাহিদা কম হয়। ফলে এটা ওজন কমাতে এবং শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
  • প্রতিদিন যোগ ব্যায়াম করতে হবে। যেন না যোগব্যায়াম মানসিক চাপ বা স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। স্ট্রেসের কারণে যেহেতু শরীরে অর্থাৎ পেটে চর্বি জমে সেহেতু যোগব্যায়ামের কারণে আপনার স্ট্রেস কম হবে হলে শরীরের চর্বি কম জমবে।
  • ওজন কমানোর বা পেটের চর্বি কমানোর অন্যতম প্রধান অস্ত্র হচ্ছে পানি। আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করেন তাহলে আপনার শরীর হাইড্রেট থাকবে এবং খাবারের চাহিদা কম হবে। প্রত্যেকবার খাবারের আগে পানি পান করলে বেশি খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায় ফলে শরীরে চর্বি জমার ঝুঁকি কমে।

তলপেটের চর্বি কমানোর উপায়

তলপেটের চর্বি কমানোর উপায় সম্পর্কে আমাদের সকলেরই অবগত থাকা উচিত। কেননা কমবেশি সকল মানুষেরই তলপেটে চর্বি জমছে। আর এ তলপেটে চর্বি জমা নিয়ে আমরা সকলেই চিন্তিত। এই চিন্তা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে আমাদের সকলকে বেশ কিছু কাজ করতে হবে। যা করলে আমরা কিছুটা হলেও এই সমস্যা থেকে সমাধান পেতে পারি। তলপেটে চর্বি জমলে সেখান থেকে মুক্তি পাওয়া বেশ কঠিন। তলপেটের চর্বি আমাদের শরীরের কোলেস্টেরলের উপরও খারাপ প্রভাব বিস্তার করে।

তলপেটে চর্বি জমার ক্ষেত্রে আমাদের লাইফস্টাইল দায়ী হলেও এটি সব সময় আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। তলপেটে চর্বি জমার বিষয়টি অনেক সময় বংশ-পরম্পরায়ও হয়ে থাকে। যার ফলে আমরা এটি ইচ্ছে করলেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। বয়স বাড়ার সাথে সাথে তলপেটে চর্বি জমতে থাকে। কেননা বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের হজম প্রক্রিয়াও হয়ে যায়।মেয়েদের ঋতুস্রাব বন্ধ হলে তলপেটে মেয়ের জমে। কারণ এ সময়ে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন কমতে থাকে।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়

পেটের চর্বি যেহেতু বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে তাই এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমাদেরকে নিয়মিত ৩০ মিনিট করে হাঁটতে হবে। ওজন এবং পেটের চর্বি কমাতে স্বাস্থ্যকর খাবার এবং ব্যায়ামের কোন বিকল্প নাই। প্রতিদিন ব্যায়াম করলে আপনার হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকবে ফলে আপনার পেটে চর্বি জমা কে প্রতিহত করবে। সবজি এবং ফাইবার যুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। চিনি বা মিষ্টি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং বাইরের জাঙ্ক ফুড খাওয়া থেকে নিজেকে কন্ট্রোল করতে হবে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম দিতে হবে। কেন না ঘুম না হলে স্ট্রেস বাড়বে আর স্ট্রেস বাড়লে শরীরে অর্থাৎ পেটে চর্বি জমে বেশি। জীবনে চলার পথে অনেক বাধা-বিপত্তি ঝড়ঝাপটা আসে যার জন্য আমরা ইচ্ছে করলেও স্ট্রেস বিহীন জীবন কাটাতে পারি না। তবে যতই আমাদের জীবনে স্ট্রেস আসুক সেখান থেকে আমরা নিজেকে বের করে নিয়ে আসার চেষ্টা করব আর সেজন্য আমাদেরকে নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করতে হবে। যোগ ব্যায়াম করলে স্ট্রেস অনেকটাই কমানো সম্ভব হয়।

৭ দিনে পেটের চর্বি কমানোর উপায়

৭ দিনে পেটের চর্বি কমানোর উপায় আসলেই কি আছে? এটি একটি শান্তনা মূলক কথা ৭ দিনে কখনো পেটের চর্বি কমানো সম্ভব নয়। সাত দিন আপনি বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে কিছুটা হলে ওজন কমাতে পারবেন কিন্তু পেটের চর্বি কমানোর জন্য আপনাকে লম্বা সময় ধৈর্য ধরে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে তাহলে আপনি পেটের চর্বি কমাতে পারবেন। দ্রুত সময়ে পেটের চর্বি কমাতে হলে আপনাকে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। যেমনঃ

  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে কেননা পানি আমাদের শরীরকে হাইড্রেট করে এবং হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে যা ওজন কমাতে বা চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
  • প্রসেস খাবার বা বাইরের জাঙ্ক ফুড খাওয়া থেকেন বিরত থাকতে হবে কেননা এসব খাবার পেটে চর্বি জমতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনাকে পেটের চর্বি কমাতে হলে অবশ্যই এসব খাবার বাদ দিতে হবে।
  • আপনি নিয়মিত সাগু দানা খেতে পারেন। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন এবং প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা ওজন এবং চর্বি কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
  • নিয়মিত আদা খেতে পারেন। আদা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে যা আপনার ওজন এবং পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।
  • নিয়মিত লেবু পানি খেতে পারেন লেবু পানি ওজন কমাতে এবং পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
  • জিরা পানি ও আদা পানির মতো ওজন কমাতে সাহায্য করে তাই আপনি নিয়মিত জিরা পানি খেলেও আপনার পেটের চর্বি এবং ওজন কমবে।
  • পরিশেষে বলা যায় যে আপনি উক্ত কাজগুলো যদি ধৈর্য ধরার নিয়মিত করেন তাহলে আপনার পক্ষে ওজন কমানো এবং পেটের চর্বি কমানো সম্ভব হবে।

ব্যায়াম ছাড়া পেটের চর্বি কমানোর উপায়

ব্যায়াম ছাড়া পেটের চর্বি কমানোর উপায় রয়েছে এ কথাটি শুনে অনেকেই অবাক হচ্ছেন তাই না? অবাক হলেও সত্যি ব্যায়াম ছাড়াও পেটে চর্বি কমানো যায়। ব্যায়াম ছাড়াই যদি আপনি আপনার পেটের চর্বি কমাতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে কঠিন ডায়েট মেনে চলতে হবে এবং কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে আপনি ব্যায়াম ছাড়া পেটের চর্বি কমাতে পারবেন।

  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। পানি আপনার শরীরের মেটাবলিজম ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করবে যা আপনার ওজন কমাতে এবং শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।
  • সবজি এবং ফল খাবেন বেশি বেশি। সকালে এক বাটি ফল এবং সবজি খাবেন এবং রাতেও একইভাবে খাবেন। বেশি বেশি ফল এবং সবজি খাওয়ার ফলে আপনার শরীরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, মিনারেল এবং ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হবে। আর এগুলো আপনার শরীরের মেটাবলে চমকে বাড়িয়ে চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।
  • মসলাদার খাবার আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর কিন্তু কিছু কিছু মসলা আছে যা আপনার পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করবে। যেমনঃ আদা, দারুচিনি এবং গোল মরিচ। এসব মসলা পেটের মেদ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
  • প্রতিদিন সকালে এবং রাতে হালকা কুসুম গরম লেবুর শরবত খাবেন চিনি ছাড়া। এ লেবুর শরবত আপনার শরীরের অর্থাৎ পেটের মেদ কমাতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।
  • প্রতিদিন সকালে ২/৩ কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে খাবেন। রসুন চিবিয়ে খাওয়ার পর পরে লেবুর শরবত খেলে এটি আপনার পেটের চর্বি কমাতে দ্বিগুণ কাজ করবে।
  • ভাত এবং রুটির ক্ষেত্রে আপনাকে সাদা চালের পরিবর্তে লাল চালের ভাত খেতে হবে এবং সাদা আটার পরিবর্তে লাল আটার রুটি খেতে হবে তাহলে আপনার শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি জমা হবে না। এর ফলে পেটের জমাকৃত চর্বি আস্তে আস্তে কমতে থাকবে।

পাঠক বন্ধুরা পরিশেষে এটাই বলতে পারি যে উপরের নিয়মগুলো যদি আপনারা ঠিকভাবে মেনে চলতে পারেন তাহলে ব্যায়াম না করেও আপনি আপনার পেটের চর্বি কমাতে পারবেন। আর এগুলো আপনি নিয়মিত করলে আর ধীরে ধীরে আপনি আপনার সুস্বাস্থ্য এবং মেদহীন শরীর ফিরে পাবেন। তবে উপরের নিয়ম গুলো মানার পাশাপাশি যদি আপনি এক সামান্য ব্যায়াম করতে পারেন তাহলে আরও দ্রুত কাজ করবে পেটের চর্বি কমাতে।

যেসব খাবার খেলে পেটের চর্বি কমানো যায়

যেসব খাবার খেলে পেটের চর্বি কমানো যায় সে সম্পর্কে যদি আমাদের ধারণা থাকে তাহলে আমরা সহজে পেটের চর্বি কমাতে পারবো। শরীরে অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি হলে শরীরের সাইজ নষ্ট হয়ে যায় এবং দেখতেও খারাপ লাগে। এজন্য অনেকে মেদ বা চর্বি কমানোর জন্য খাবার নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। তবে এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেয়েই আপনি আপনার শরীরের চর্বি কমাতে পারবেন। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক কোন কোন খাবার খেয়ে আপনি শরীরের চর্বি কমাতে পারবেন।

পেটের-চর্বি-কমানোর-কার্যকারী-উপায়

  • তরমুজঃ তরমুজ একটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যাতে পানির পরিমাণ রয়েছে ৮০%। বেশি বেশি তরমুজ খেলে আপনার শরীরে পানির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এটি পেট ভরা রাখে ফলে  ক্ষুধা কম লাগে। যেহেতু খুদা কম লাগে সেহেতু অতিরিক্ত খাবারের চাহিদা থাকে না ফলে আস্তে আস্তে পেটের চর্বি কমতে থাকে।
  • কাজুবাদামঃ কাজুবাদাম ভিটামিন ই এবং আমি সমৃদ্ধ একটি খাবার যা আপনার পেটকে দীর্ঘ সময় ভরা রাখে এবং এতে কোন ফ্যাট নেই। তাই আপনি পেটের চর্বি কমানোর জন্য নিয়মিত কাজুবাদাম খেতে পারেন।
  • অ্যাভোকাডোঃ বিভিন্ন পুষ্টিতে ভরপুর একটি ফল যাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। এটি খেলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে ফলে ক্ষুধা লাগে না। এটি দ্রুত পেটে চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
  • মটরশুটিঃ দীর্ঘ সময় ক্ষোধাহীন থাকার জন্য মটরশুটি অনেক কার্যকরী। এটি খেলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং পেটের চর্বি কমাতে অনেক সাহায্য করে।
  • সবুজ শাকসবজিঃ আপনি যদি মেদবিহীন শরীর পেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাক-সবজি খেতে হবে। আপনার খাবার প্লেটে যেন ভাতের চাইতে শাক সবজির পরিমাণ বেশি থাকে তাহলে আপনার পক্ষে পেটের চর্বি কমানো সম্ভব।
  • শশাঃ পেটের চর্বি কমাতে শসা খুবই কার্যকরী একটি খাবার। আপনি যদি প্রতিদিন নিয়ম করে শসা খেতে পারেন তাহলে আপনার খুবই দ্রুত পেটের চর্বি কমবে। শসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পানি যা আপনার শরীরকে হাইড্রেট রাখবে।
  • পানিঃ ওজন কমাতে এবং পেটের চর্বি কমাতে পানির কোন বিকল্প নেই। আপনি যদি পেটের চর্বি কমাতে চান তাহলে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। খাবার খাওয়ার আগে নিয়ম করে পানি খেলে আপনার বেশি খাবার প্রবণতা কমে যাবে যা আপনার পেটে চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।

ব্যায়ামের সাহায্যে পেটের চর্বি কমানোর উপায়

ব্যায়ামের সাহায্যে পেটের চর্বি কমানোর উপায় হল আপনাকে প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করলে আপনার শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, শরীরের রক্ত চলাচল ভালো হবে এবং শরীর সুস্থ থাকবে। অনেকের জিমে গিয়ে ব্যায়াম করতে পছন্দ করে না এক্ষেত্রে আপনি জিমে না গিয়েও বাড়িতে কিছু উন্মুক্ত ব্যায়াম করার মাধ্যমে আপনার পেটের চর্বি কমাতে পারেন। সাঁতার কাটা ও এক ধরনের ব্যায়াম সাঁতার কাটার মাধ্যমে আপনি আপনার পেটের চর্বি কমাতে পারেন।

যারা গ্রামে থাকেন তাদের জন্য তো সুবিধা নদী আছে সেখানে সাঁতার কাটতে পারবেন কিন্তু যারা শহরে থাকেন তাদের জন্য এখন অনেক ধরনের সুইমিং পুলের ব্যবস্থা রয়েছে যেখানে গেলে সাঁতার কাটতে পারা যায় তবে এখানে কিছুটা খরচের ব্যাপার রয়েছে। সাইকেল চালানো এক ধরনের ব্যায়াম আপনি যদি নিয়মিত সাইকেল চালানোর অভ্যাস করেন তাহলে আপনি আপনার শরীরের অর্থাৎ পেটের চর্বি কমাতে সক্ষম হবেন।

এছাড়াও কিছু ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম রয়েছে যেগুলো করার মাধ্যমে আপনি আপনার পেটের চর্বি কমাতে পারেন। যেমন ধরুন লাফালাফি করা, দড়ি লাফ করা, দৈনিক ১০০ বার উঠবস করা ইত্যাদি। তবে আপনি সেটা আপনাকে করতে হবে নিয়মিত। আপনি যদি সঠিকভাবে নিয়মিত শরীফ চর্চা বা ব্যায়াম না করেন তাহলে আপনার পক্ষে পেটের বা শরীরের চর্বি কমানো সম্ভব নয়। কেননা শরীরের চর্বি করা কমানো একটি লম্বা প্রসেস একটি দু চারদিন করে কমানো সম্ভব হবে না। তাই আপনাকে নিয়মিত করতে হবে।

শেষ কথাঃ পেটের চর্বি কমানোর কার্যকারী উপায়

পেটের চর্বি কমানোর কার্যকারী উপায় সম্পর্কে উপরে অনেক কিছু আলোচনা করা হয়েছে যা পড়ে আপনারা উপকৃত হবেন। শরীরে অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি থাকলে একজন মানুষের সৌন্দর্য নষ্ট হয়। তাই আপনি যদি নিজেকে সুন্দর স্বাস্থ্যের অধিকারী এবং সৌন্দর্যময় করে তুলতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত খাবারের ব্যাপারে এবং ব্যায়ামের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। পেটের চর্বি কমানোর যেহেতু একটি সময় সাপেক্ষ বিষয় সেহেতু এটি আপনাকে ধৈর্য ধরে করতে হবে।

এখনকার সময়ে বেশিরভাগ মানুষই পেটের চর্বি নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন। এই অস্বস্তি জনিত অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে একজন মানুষকে নিয়মিত শরীরচর্চা এবং খাবারের অভ্যাসের প্রতি সচেতন থাকতে হবে। কেননা আপনি যদি সঠিক খাবার না খান এবং নিয়মিত শরীর চর্চা না করেন তাহলে আপনার শরীরে চর্বি জমতেই থাকবে। আর এ ধীরে ধীরে জমতে থাকা চর্বি আপনার শরীরে একসময় বিশাল ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই আসুন আমরা নিয়মিত স্বরূপ চর্চা করি এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খায়।






এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর এস ড্রিমস ব্লগেনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url