সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়
টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতাসকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ যে কোন খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো না।তাই আমাদের মোটা হওয়ার জন্য খাবার খেতে হলে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। মোটা হওয়ার জন্য অনেক উপায় আছে।
মোটা হওয়ার সবচেয়ে সহজ ও গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। অনেকে মোটা হওয়ার জন্য ওষুধ খান আমি বলব ওষুধ খেয়ে ওজন বাড়ানো একদমই উচিত নয়। ওষুধ খেয়ে মোটা হলে লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনায় বেশি থাকে।
পেজ সূচীপত্রঃ সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়
- সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়
- দ্রুত ওজন বাড়ে কি খেলে
- মোটা হওয়ার জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা
- কোন কোন সবজি খেলে ওজন বাড়ে
- মোটা হওয়ার জন্য খাদ্য পরিকল্পনা
- খাবারের তালিকায় চকলেট এবং চিজ
- মোটা হওয়ার ক্ষেত্রে পানির ভূমিকা
- ওজন বাড়াতে ব্যায়ামের ভূমিকা
- বারবার খাবার গ্রহণ
- টেনশন মুক্ত থাকা ও পরিমিত ঘুমানো
- বেশি ক্যালোরি ও সঠিক প্রোটিন গ্রহণ
- লেখকের মন্তব্য
সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়
সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় এই সম্পর্কে জানতে হলে এই
আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ুন। সঠিক ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য
এবং ব্যায়ামই হলো মোটা হওয়ার সঠিক উপায়। নিয়মিত এই দুই কাজ করলে
মোটা হওয়া কেউ আটকাতে পারবেনা। আপনি কি মোটা হতে চাইছেন বা আপনার ওজন
বাড়াতে চাইছেন? তাহলে অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে সকালে খালি পেটে কি খেলে
মোটা হওয়া যায়।
এমন কিছু খাবার আছে যা আপনাকে মোটা হতে সাহায্য করবে। দ্রুত ওজন বাড়ে কি খেলে তা
যদি আপনি জেনে রাখেন তাহলে খুব তাড়াতাড়ি আপনি আপনার সঠিক ওজন ফিরে
পাবেন। একজন মানুষের শরীরের ওজন তার সুস্থতা নির্ধারণ করে। এমন অনেকে আছেন
যারা তাদের বয়স অনুযায়ী সঠিক ওজন ধরে রাখতে পারেন না বা সঠিক ওজন লাভ করতে
পারেন না।
আমরা অনেকেই সকালে উঠে পেট ভরে খাবার খাওয়া পছন্দ করি না। কিন্তু আপনি কি
জানেন? বিশেষজ্ঞদের মতে সকালে পেট ভরে খাবার খেলে শরীর সুস্থ
থাকে। তাহলে চলুন দেখে নেয়া যাক এমনকি কি খাবার আছে যা সকালে খালি পেটে
খেলে মোটা হওয়া সম্ভব। মোটা হওয়ার জন্য যেসব খাবার গুলো সকালে খাওয়া
দরকার ।
ডিমঃ ডিমের কুসুমে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট থাকে এবং ডিমের সাদা অংশে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে যা মাংসপেশি গঠন করতে সাহায্য করে। তাই ওজন বৃদ্ধিতে ও মোটা হতে ডিমের গুরুত্ব অপরিসীম। রোজ সকালে খাদ্য তালিকায় একটা ডিম অবশ্যই রাখবেন।
দুধঃ দুধ মোটা হওয়ার জন্য একটি অত্যন্ত উপকারি খাদ্য। আপনি যদি রোগা হয়ে থাকেন এবং খুব দ্রুত মোটা হতে চান তাহলে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস দুধ অবশ্যই পান করবেন। দুধে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ক্যালোরি থাকে যা আপনার শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে।
ময়দা জাতীয় খাবারঃ রুটি, পাউরুটি, কেক, নান ইত্যাদি ময়দা জাতীয়
খাবারের প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি ও কার্বোহাইড্রেট থাকে যা ওজন বৃদ্ধি করে। সকালে
পেট ভরে খেতে এ জাতীয় খাবার খাদ্য তালিকায় রাখবেন।
চিনিঃ চিনিতে ও প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি ও কার্বোহাইড্রেট থাকে। তাই সকালের খাবারের সাথে চীনের সাথে ভুলবেন না। চিনি ওজন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
চেরিঃ চেরি ফলে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি ও শর্করা থাকে। সালাদ এর সাথে চেরি যোগ করলে আরো বেশি উপকার পাবেন এবং তাড়াতাড়ি ওজন বাড়াতে পারবেন।
বাদামঃ রাতে ভিজিয়ে রাখা কাঁচা বাদাম সকালে উঠে খালি পেটে খেতে পারেন। বাদামে স্বাস্থ্যকর ভিটামিন, প্রোটিন ও ফ্যাট থাকায় এটি ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক।
কিসমিসঃ কিসমিস এও অনেক শর্করা এবং ক্যালোরি থাকে যা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। বাদামের সাথে কিসমিস ভিজিয়ে রেখেও সকালে খেতে পারেন।
আখরোটঃ আখরোটে ও প্রচুর ক্যালোরি ও শর্করা থাকে। বাদামের সাথে আখরোটও খেতে পারেন দ্বিগুন ফল পাবেন।
দ্রুত ওজন বাড়ে কি খেলে
দ্রুত ওজন বাড়ে কি খেলে এই প্রশ্ন চিকন মানুষদের মনে সর্বদাই থাকে। সুন্দর
স্বাস্থ্যের অধিকারী কে না হতে চাই? যারা একটু চিকন প্রকৃতির তারা সব সময়
চাই মোটা হতে। সেই কারণে তারা কিছু না কিছু খেতেই থাকে। তবুও যদি
শারীরিক গঠনের উন্নতি না হয় তাহলে একটাই প্রশ্ন আসে মনে কেন ওজন বাড়ছে
না? সব সময় এটা ওটা না খেয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে ওজন বাড়ানো সম্ভব।
আসুন জেনে নি কোন কোন খাবার খেলে খুব তাড়াতাড়ি ওজন বাড়ানো সম্ভব। খুব
দ্রুততার সাথে ওজন বাড়াতে বাদাম ও কিসমিসের গুরুত্ব অপরিসীম। রাতে ভিজিয়ে
রাখা আধা কাপ বাদাম ও কিসমিস সকালে খালি পেটে খেলে দ্রুততার সাথে ওজন বৃদ্ধি
পাবে। রোজ অন্তত একবার পান্তা ভাত খান আর ঘুম পেলে যতক্ষণ ইচ্ছা ঘুমান।
কিছুদিনের মধ্যেই ওজন বাড়তে শুরু করবে। বাইরের ফাস্টফুড জাতীয় খাবার যেমন- রোল, চাউমিন, বার্গার, চপ, কাটলে্ট, পিৎজা খুব দ্রুত ওজন বাড়াতে সক্ষম। মিষ্টি বা চিনি জাতীয় খাবার যেমন স্বাদে অতুলনীয় তেমন দ্রুত ওজন বাড়াতেও পারদর্শী। চর্বিযুক্ত লাল মাংস দ্রুত ওজন বাড়াতে সক্ষম। সপ্তাহে একদিন এই মাংস খেলে ওজন বাড়বে খুব তাড়াতাড়ি।
আরও পড়ুনঃ কলার উপকারিতা ও অপকারিতা
মোটা হওয়ার জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা
মোটা হওয়ার জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা এ বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। মনে
রাখবেন মোটা হতে চাইলে আপনাকে সব সময় উচ্চ ক্যালরিযুক্ত ও সঠিক প্রোটিন সমৃদ্ধ
খাবার খেতে হবে। আসুন জেনে নেয়া যাক প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কি কি খাবার
রাখলে বা কি খেলে মোটা হওয়া যায় তাড়াতাড়ি।
ভাতঃ বাঙালির সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার হল ভাত। ভাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি ও শর্করা যা আমাদের ওজন বাড়াতে কাজ করে। মোটা হতে চাইলে অন্তত দুবেলা ভাত খেতে হবে। সব থেকে ভালো হয় যদি পান্তা ভাত খেতে পারেন। রোজ সকালে পান্তা ভাত খেলে খুব তাড়াতাড়ি ওজন বাড়বে।
তৈলাক্ত মাছঃ যে কোন ধরনের তৈলাক্ত মাছ হলো স্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রোটিন এবং প্রচুর পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য। তৈলাক্ত মাছে রয়েছে ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ও বিভিন্ন খনিজ উপাদান। যা আপনার স্বাস্থ্য ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। সারাদিনের খাদ্য তালিকায় তৈলাক্ত মাছ রাখা অত্যন্ত উপকারী।
লাল মাংসঃ লাল মাংসে মায়োগ্লোবিন নামে এক ধরনের আয়রন বা লৌহযুক্ত প্রোটিন থাকে। যেহেতু লালমাংশের সম্পৃক্ত চর্বি বেশি হয় তাই এই খাবারের কোলেস্টরেল ও ফ্যাটের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। যা ওজন বাড়াতে ও মোটা হতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে অন্তত একদিন লাল মাংসের রেসিপি খাদ্য তালিকায় রাখবেন।
ফাস্টফুডঃ এমনিতে ফাস্টফুড খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে
ক্ষতিকর কিন্তু মোটা হতে চাইলে এর গুরুত্ব অপরিহার্য। আপনি যদি খুব রোগা হন
এবং শরীরের ওজন বাড়াতে চান তাহলে মাঝেমধ্যে সন্ধ্যের টিফিনে ফাস্টফুড
খাবেন। তবে একটা কথা অবশ্যই মাথায় রাখবেন মোটা হওয়া বা ওজন বাড়ানো মানে
কিন্তু ফুলে যাওয়া নয়।
ততটাই মোটা হন যতটা আপনার উচ্চতা ও বয়সের সাথে সামঞ্জস্য হয়। খুব বেশি মোটা
হওয়া কিন্তু স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। অতিরিক্ত মোটা হলে নানান
রোগব্যাধি আপনার শরীরে বাসা বাঁধবে। আপনি যদি খুবই রোগা হন তাহলে উপরে
দেওয়া অভ্যাস অনুসরণ করতে পারেন এবং নির্দিষ্ট ওজন ফিরে পেলে খাদ্যাভ্যাসের
পরিবর্তন ও নিয়ন্ত্রণ করা আবশ্যক।
কোন কোন সবজি খেলে ওজন বাড়ে
আপনি রোগা থেকে মোটা হতে চান কিংবা মোটা থেকে রোগা অর্থাৎ আপনি আপনার শরীরের
ওজন বাড়াতে চান কিংবা কমাতে চান উভয় ক্ষেত্রেই আপনাকে অবশ্যই জেনে রাখতে হবে
কোন কোন সবজি খেলে ওজন বাড়ে। মোটা হতে চাইলে বা ওজন বাড়াতে চাইলে এই
সবজিগুলি আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই যোগ করা উচিত।
অন্যথায়, মানে যদি ওজন কমাতে চান বা রোগা হতে চান তাহলে অবশ্যই এই সবজিগুলিকে
এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ এই সবজিগুলি খেলে আপনার ওজন বেড়ে যাবে। চলুন
এখন দেখে নেয়া যাক কোন কোন সবজি খেলে ওজন বাড়ে। আপনি ওজন বাড়াতে চাইলে
নিচে দেয়া সবজিগুলো আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন।
সাদা আলুঃ সাদা আলু এমন একটি সবজি যাতে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট থাকে
তাই অল্প পরিমাণ খেলেই ওজন বৃদ্ধি করে। আলু সারা বছর ধরেই বাজারে কিনতে পাওয়া
যায় এবং এটি এমন একটি সবজি যা প্রায় সব রকম রেসিপিতে ব্যবহৃত হয়। তাই ওজন
বাড়ানোর পরিকল্পনা থাকলে আলুকে নিত্যদিনের খাদ্য তালিকা রাখতে পারেন।
মিষ্টি আলুঃ লাল আলু মা মিষ্টি আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি
এবং কার্বোহাইড্রেট তাই মিষ্টি আলু খেলেও বাড়বে ওজন। ওজন বাড়াতে চাইলে বা
মোটা হতে চাইলে এই মিষ্টি আলু খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন।
বিটঃ বিট এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট। বিট খাওয়ার ফলে শরীরে শর্করা বা চিনির পরিমাণ বেড়ে যায় যা ওজন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এছাড়াও বিট খাওয়ার ফলে বিপাকীয় প্রতিক্রিয়া বৃদ্ধি পায় ফলে শরীরে চর্বি বৃদ্ধি পায় সেই সাথে ওজনও।
এছাড়াও মিষ্টি জাতীয় সবজি যেমনঃ মিষ্টি কুমড়া খেলে ওজন বাড়ে এবং মাটির নিচে
জন্মায় এমন যেকোনো সবজি যেমন মূলা, গাজর, ওল, মান কচু ইত্যাদিতে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে ক্যালরি ফলে এ ধরনের সবজি খেলেও ওজন বাড়বে।
মোটা হওয়ার জন্য খাদ্য পরিকল্পনা
মোটা হওয়ার জন্য খাদ্য পরিকল্পনা করা অবশ্যই জরুরী। মোটা হওয়ার জন্য যে
কোন খাবার যেকোনো সময় খেয়ে নেয়াটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই
মোটা হওয়ার জন্য যে খাবারই খান না কেন সেটা আপনাকে পরিকল্পনা মাফিক খেতে
হবে। আপনার ওজন বাড়ানোর জন্য নিম্নলিখিত খাদ্য পরিকল্পনাটি আপনি অনুসরণ
করতে পারেন।
আপনি যদি মোটা হতে চান অবশ্যই সকালে খালি পেটে বাদাম খাবেন। সকালে একটি মাঝারি আকারের মৌসুমী ফল, চা এবং চিড়া সহ দুধ খেতে পারেন। সকালে ডিম খাওয়া মোটা হওয়ার জন্য একটি উপকারী খাদ্য, তাই আপনি সকালে খালি পেটে ডিম খেতে পারেন। মোটা হতে চাইলে প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি খাবেন।
আপনি সবুজ শাক, পনির, জলপাইয়ের তেল, টমেটো এবং চিকেনের তরকারির মত খাবার
আপনার দুপুরের খাবারের তালিকা রাখতে পারেন। তাছাড়া মসুর ডাল,,সবজি, মাছ সহ
একবাটি ভাত এবং টক দইও খেতে পারেন। ওজন বাড়ানোর জন্য মুরগির মাংস অনেকটাই
উপযোগী মনে করা হয়। কারণ মুরগির মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া
যায়।
যা মোটা হওয়ার জন্য একটি অতুলনীয় উৎস। শুকনো ফল খাওয়া ওজন বাড়াতে
সাহায্য করার প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিদিন এক মুঠো বাদাম কাজু বা আখরোট একটি
স্বাস্থ্যকর নাস্তার বিকল্প হতে পারে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের বীজ খেলেও মোটা
হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শুকনো ফল ওজন বাড়াতে খুবই কার্যকরী।
আপনি আপনার পছন্দমত ভাত রুটি যোগ করতে পারেন আপনার রাতের খাবারে। আপনি সেগুলো
মাছ, মুরগি কিংবা বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে খেতে পারেন। তাছাড়া আপনি ভারী
খাবার যদি এড়াতে চান, তবে আপনি বিকল্প হিসেবে কোনো ধরনের সুপ খেতে পারেন যা
আপনাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন দিতে পারে।
খাবারের তালিকায় চকলেট এবং চিজ
খাবারের তালিকায় চকলেট এবং চিজ রাখলে আপনার ওজন বৃদ্ধি করতে সহায়তা
করবে। সচরাচর বাইরের খাবার খেতে আমরা নিষেধ করে থাকি। কিন্তু ওজন
বৃদ্ধি করতে চাইলে বাইরের খাবার যেমনঃ আইসক্রিম ,পেস্ট্রি,বার্গার ইত্যাদি খাবার
খুবই কার্যকর। এতে ফ্যাট থাকে তাই বেশি খেলে শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই আপনি
চাইলে এগুলো খেতে পারেন কিন্তু তা হবে পরিমাণমত।
আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে চকলেট এবং চিজ রাখতে পারেন। প্রতিদিন নিয়ম করে চকলেট এবং চীজ খেলে আপনার ওজন খুব দ্রুত বেড়ে যাবে। কোন কিছুই অতিরিক্ত ভালো না সেজন্য আপনি মোটা হতে চাইলে চকলেট এবং চিজ খাবেন কিন্তু সেটাও পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। সবকিছুর নিয়ম মেনে খেলে আপনি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবেন।
আরও পড়ুনঃ মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা
মোটা হওয়ার ক্ষেত্রে পানির ভূমিকা
মোটা হওয়ার ক্ষেত্রে পানির ভূমিকা অপরিসীম। আপনি মোটা হতে চান কিংবা চিকন হতে
চান বেশি বেশি পরিমাণে পানি খেতে হবে। সুস্বাস্থ্যের জন্য পানির বিকল্প
নেই। কারণ পর্যাপ্ত পানি শরীরের ব্যালেন্স ঠিক রাখে। অতিরিক্ত পানি
খেলেও আপনার শরীরে যেমন ক্ষতি হবে তেমনি কোম্পানি খেলেও আপনার শরীর ক্ষতিগ্রস্ত
হবে।
সকালে খালি পেটে পানি খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকার। আপনি মোটা হতে
চাইলেও সকালে খালি পেটে পানি খাবেন আবার চিকন হতে চাইলেও সকালে খালি পেটে পানি
খাবেন। বেশি বেশি পানি খেলে আপনার শরীরের ভারসাম্য ঠিক থাকবে। শরীর
সুস্থ রাখার জন্য পানের কোন বিকল্প নেই। সুস্থ থাকতে চাইলে আপনি অবশ্যই সঠিক
পরিমাণে পানি পান করুন।
ওজন বাড়াতে ব্যায়ামের ভূমিকা
ওজন বাড়াতে ব্যায়ামের ভূমিকা অপরিসীম। মোটা হওয়া মানে শুধুমাত্র ওজন বাড়ানো না। মোটা হলেই যে মানুষ স্বাস্থ্যবান হয় এমনটা না। আপনি যদি ওজন বাড়াতে চান অবশ্যই আপনাকে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বাড়াতে হবে। আপনি যদি ওজন বাড়াতে চান অবশ্যই আপনাকে ব্যায়াম করতে হবে।এক্ষেত্রে
শুধু দৌড়ঝাঁপই যথেষ্ট না। দরকার প্রতিদিন নিয়ম করে জিম করা।
জিমে অভিজ্ঞ ট্রেইনার থাকেন যিনি আপনার ওজন এবং চেহারা দেখেই আপনাকে বলে দিবেন
কোন ব্যায়াম আপনার জন্য উপযোগী। তাই ট্রেইনারের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যায়াম
করলে আপনার ওজন বাড়াতে সেটা সাহায্য করবে। তাই সঠিকভাবে ব্যায়াম করার
মাধ্যমেও আপনি আপনার ওজন বাড়াতে পারেন। ট্রেইনারও আপনাকে বলে দিবে সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়।
বারবার খাবার গ্রহণ
বারবার খাবার গ্রহণ সবার জন্যই প্রযোজ্য। একবারে অনেক খাবার না খেয়ে দুই এক ঘণ্টা পর পর কিছু খাওয়া উচিত।যারা ওজন বৃদ্ধি করতে চান তারা বেশি বেশি করে খাবেন। এ সময় আপনি দুধ ,দই, ফল, ছানা ইত্যাদি দিয়েই আপনার খাদ্য তালিকা পূরণ করতে পারেন। এসব ভাবার আপনার ওজন বাড়াতে সাহায্য করবে।ওজন বাড়াতে সক্ষম এরকম খাবার আপনি বারবার বেশি বেশি করে খাবেন।
খাবার বারবার বেশি বেশি করে খেলেও আপনার ওজন খুব দ্রুত বাড়বে। পুষ্টিকর খাবার বারবার বেশি বেশি করে খেলে আপনার যেমন শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হবে তেমনি আপনার ওজন বাড়াতেও সাহায্য করবে। পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে ওজন বৃদ্ধি পেলে আপনার শরীরের কোন ক্ষতি হবে না। এতক্ষনের আলোচনায় নিশ্চয় বুঝে গেছেন সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়।
টেনশন মুক্ত থাকা ও পরিমিত ঘুমানো
টেনশন মুক্ত থাকা ও পরিমিত ঘুমানো ওজন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সব সমস্যার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে টেনশন। ওজন বৃদ্ধিতে যেমন টেনশন মুক্ত থাকা প্রয়োজন ঠিক তেমনি ওজন কমাতেও টেনশন মুক্ত থাকা খুবই আবশ্যক। আজ কাল টেনশন মুক্ত থাকা খুবই কঠিন তারপরও চেষ্টা করবেন যতটা সম্ভব টেনশন মুক্ত থাকার।
শরীর সুস্থ রাখতে ঘুম খুবই প্রয়োজন। প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা অবশ্যই ঘুমাতে হবে। এর থেকে কম হওয়া যাবে না কারণ ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব পড়ে। এছাড়া প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে নিয়ম করে ইয়োগা বা যোগাসন করুন। এতে আপনার ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। আর তাই সুস্বাস্থ্যের জন্য পরিমিত ঘুমানো অত্যন্ত প্রয়োজন।
আরও পড়ুনঃ বিটরুট দিয়ে রূপচর্চা
বেশি ক্যালোরি ও সঠিক প্রোটিন গ্রহণ
বেশি ক্যালোরি ও সঠিক প্রোটিন গ্রহণ ওজন বাড়াতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওজন
কমানোর ক্ষেত্রে আমরা বেশি ক্যালরি বার্ন করি এবং কম ক্যালরি গ্রহণ
করি। কিন্তু এক্ষেত্রে উল্টোটা হবে যতটা ক্যালরি গ্রহণ করি তার দ্বিগুণ
ক্যালোরি গ্রহণ করতে হবে। ওজন বৃদ্ধির জন্য শরীরের চাহিদার তুলনায় বেশি ক্যালরি
গ্রহণ করতে হবে।
ওজন দ্রুত বৃদ্ধি করতে চাইলে দিনে ৬০০-৭০০ ক্যালোরি বেশি গ্রহণ করতে হবে। আর
যদি ওজন আস্তে আস্তে বাড়াতে চান তাহলে প্রতিদিন ৪০০- ৫০০ ক্যালোরি বেশি গ্রহণ
করতে হবে। এভাবে এক সপ্তাহ প্রয়োজন এর চেয়ে বেশি ক্যালরি গ্রহণ করলে আপনার
ওজন এমনিতেই বেড়ে যাবে। অর্থাৎ প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ
করলে ওজন বাড়বে।
ওজন বৃদ্ধি করতে শুধুমাত্র ক্যালোরি যথেষ্ট না। ক্যালরির পাশাপাশি সঠিক
প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে।সঠিক প্রোটিন গ্রহণ না করলে ক্যালরি বাড়তি ফ্যাটের কারণ
হয়ে দাঁড়াবে। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন ডিম,
ডাল ও দুধ অবশ্যই রাখতে হবে। ক্যালরির সাথে সঠিক পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করলে
আপনি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবেন।
ঘুমাতে যাওয়ার আগে এমন কিছু খেতে পারেন যা বেশ পুষ্টিকর এবং
ক্যালরিযুক্ত। কারণ সেটা ঘুমিয়ে পড়েছেন বলে খরচ হচ্ছে না এবং পুরো রাত
আপনার শরীরে ক্যালরির কাজ করবে এবং ওজন বৃদ্ধি করবে। তাই প্রতিদিন ঘুমানোর
আগে দুধ ও মধু মিশিয়ে খান। এটি ওজন বৃদ্ধিতে পরীক্ষিত এবং মোটা হওয়ার সহজ
উপায়।
লেখকের মন্তব্য
সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় এ বিষয় নিয়ে উপরে অনেক কিছু আলোচনা
করা হয়েছে। উপরের নিয়ম গুলো যদি আপনি সঠিকভাবে মেনে খাদ্য তালিকা মেনটেন
করতে পারেন তাহলে আপনার পক্ষে মোটা হওয়া খুবই সহজ হবে। মোটা হওয়া বলতে
শুধু ওজন বাড়ানোকেই বুঝাই না। বরং সুস্বাস্থ্যকে বোঝায়।
পরিশেষে আমি এতোটুকুই বলবো যে আপনি যদি খুব বেশি রোগা হন তাহলে মোটা হওয়ার জন্য
চেষ্টা করতেই পারেন কিন্তু মোটা হওয়ার জন্য এমন কিছু করবেন না যাতে আপনার
স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। মোটা হওয়ার জন্য আপনি নিয়ম মেনে স্বাস্থ্যকর
খাবার খাবেন এবং নিয়মিত ব্যায়াম করবেন তাহলে আপনি মোটা হতে পারবেন অর্থাৎ
সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারবেন।
আর এস ড্রিমস ব্লগেনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url