গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়
টক দই খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতাগর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয় এ বিষয়ে যদি আপনি বিস্তারিত জানতে
চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। বেশি শুয়ে থাকা কারো শরীরের জন্যই
ভালো নয়। শরীরের চাহিদা অনুযায়ী সকলের বিশ্রাম নেওয়া উচিত।
পেজ সূচীপত্রঃগর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়
- গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়
- গর্ভাবস্থায় যেসব কাজ করা যাবে না
- গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না
- গর্ভাবস্থায় সবজি খাওয়ার নিয়ম
- গর্ভাবস্থায় ঘুম গুরুত্বপূর্ণ কেন
- গর্ভাবস্থায় না খেয়ে থাকলে কি হয়
- গর্ভাবস্থায় কতটুকু ঘুমের প্রয়োজন
- গর্ভাবস্থায় কতটুকু হাঁটা উচিত
- গর্ভাবস্থার ডানকাত হয়ে ঘুমানো
- লেখক এর মন্তব্যঃ গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয় এ বিষয়টি একজন গর্ভবতী মহিলার মাথায়
রাখা উচিত। এ সময়ে মায়ের শরীরে অনেক পরিবর্তন ঘটে থাকে সেগুলো হল হাড়ের
স্থান পরিবর্তন, হাড়ের সংকোচন, মায়ের শরীরের ওজন বৃদ্ধি। এ অবস্থায় বেশি
শুয়ে থাকলে কিছু সমস্যা হতে পারে। যেমনঃ শরীরের পানির স্তর কমে যাওয়া,
রক্তচাপ বাড়া, শ্বাসকষ্ট সমস্যা হওয়া, গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া।
এ সমস্যাগুলো এড়াতে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত চলাচল করা উচিত। শুয়ে থাকার সময়
বুকের ওপরে ভর দিয়ে শুয়ে থাকা ভালো না। বাম বা ডান পাশে শুয়ে থাকা ভালো।শরীরের
উপরের অংশ সামান্য উঁচুতে রাখতে শুয়ে থাকার সময় কুশন ব্যবহার করা ভালো। আশাকরি এই তথ্যগুলো আপনাদের গর্ভাবস্থার সময় কাজে লাগবে।
দীর্ঘ সময় শুয়ে থাকলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন কমে যেতে পারে বিশেষ করে যদি একজন
গর্ভবতী মহিলা তার পিঠের উপর ভর দিয়ে শুয়ে থাকেন এটি রক্তচাপ কমিয়ে দিতে পারে
এবং গর্ভের শিশুর অক্সিজেন সরবরাহে প্রভাব ফেলতে পারে। অতিরিক্ত শুয়ে
থাকলে শরীরের কার্যকারিতা কমে যায় যা অপ্রয়োজনীয় ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে
পারে।
অতিরিক্ত শুয়ে থাকার কারণে পেশিগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে যা প্রসবের সময় জটিলতা
সৃষ্টি করতে পারে।বেশি শুয়ে থাকার কারণে শরীরে অলসতা ভর করে যা ডিপ্রেশন বা
উদ্বেগ বাড়াতে পারে। গর্ভাবস্থায় যেহেতু হরমোনের বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে
সেহেতু অধিক সময় শুয়ে থাকলে মানসিক অবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব
পড়ে।
কম নড়াচাড়া করলে পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা কমে যায় যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের
সমস্যা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘ সময় শুয়ে থাকলে পায়ের শিরায় রক্ত জমাট বাধার
ঝুঁকি বেড়ে যায় এটি গর্ভাবস্থায় মারাত্মক ঝুঁকি হতে পারে। গর্ভাবস্থায়
সুস্থতা বজায় রাখতে বিশ্রাম এবং শারীরিক কার্যকলাপ এর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা
খুবই জরুরী।
গর্ভাবস্থায় যেসব কাজ করা যাবে না
গর্ভাবস্থায় যেসব কাজ করা যাবে না তা আমরা সকলেই কম বেশি জানি।গর্ভাবস্থায়
প্রায় অনেক ধরনের কাজই করা নিষেধ করে থাকে ডাক্তার। যেমন ভারি কোন জিনিস তুলা,
উপরে হয়ে বা ঝুঁকে কাজ করা, উঁচু জুতা পরা,একটানা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে অথবা পা
ঝুলিয়ে বসে থাকা, টাইট ফিট জামা কাপড় পড়া, ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাওয়া, পেটে
চাপ পড়বে এমন কাজ না করা।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কোন কোন খাবার খাওয়া যাবেনা
মাছ মাংস ডিম বা অন্য কোন খাবার ভালোভাবে সিদ্ধ করে রান্না করে খেতে হবে।
ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ খাওয়া যাবেনা। এছাড়া শারীরিক শ্রম ও অতিরিক্ত
শক্তির কাজ যেমন গর্ভাবস্থায় শারীরিক শ্রম করা নিষেধ।এটি আপনার শরীরের
অতিরিক্ত শক্তি ও স্বাস্থ্য এর উপরে অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবেনা এ বিষয়টি একজন গর্ভবতী মহিলাকে মাথায়
রাখতে হবে।গর্ভাবস্থায় ফল খাওয়া মা ও শিশুর জন্য ভালো। গর্ভাবস্থায় মা ও
শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য কিছু ফল খাওয়া উচিত নয়। কারণ কিছু ফল আছে যা মা ও শিশুর
জন্য ক্ষতিকর। সেজন্য আপনাকে ফল খাওয়ার সময় বুঝে শুনে খেতে হবে। নিচে কিছু ফলের
কথা উল্লেখ করা হলোঃ
-
আনারসে ব্রোমেলাইন নামক একটি এনজাইম থাকে। যা জরায়ুকে নরম করে এবং গর্ভপাত বা
অকাল প্রসবের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
- আঙ্গুরে রেজভের ট্রোল নামক একটি যৌগিক থাকে। যা আপনার হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। এটি বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় শেষ তিন মাসে খাওয়া উচিত নয়।
- আধা কাঁচা পেঁপেতে লেটেক্স নামক একটি পদার্থ থাকে। সংকোচন এবং গর্ভপাতের কারণ হতে পারে। পেঁপে খাওয়ার পর আপনি পেটব্যথা বা বমি বমি অনুভব করতে পারে।
- তেঁতুলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, যদি এটি অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া হয় তবে এটি আপনার দেহের প্রজেস্টেরনের উৎপাদন দমন করতে পারে। প্রোজেস্টেরনের নিম্ন স্তরের ফলে গর্ভপাত হতে পারে।
- হিমায়িত ফল খাওয়া যাবেনা। কারণ এটি আপনার এবং আপনার শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ হিমায়িত ফলে ব্যাকটেরিয়া থাকে।
গর্ভাবস্থায় সবজি খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় সবজি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে গর্ভবতী মহিলাকে অবহিত থাকতে
হবে।গর্ভাবস্থায় মেয়েরা সব থেকে কঠিন সময় পার করে থাকে। বিশেষত গর্ভাবস্থার
শেষের দিকটায় অনেকটাই কঠিন হয়ে থাকে। এ সময় মেয়েদের অনেক কিছু খাবার আছে
যেগুলো বুঝে শুনে খেতে হয়। তাই আপনার নিকটস্থ চিকিৎসকের সাথে আলাপ করে
গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে তা জেনে নিবেন।
কেননা কিছু খাবার আছে গর্ভাবস্থায় খেলে উপকার পাওয়া যায় আবার কিছু খাবার আছে
গর্ভাবস্থায় খেলে ক্ষতি হয়। কিছু সবজি আছে যেগুলো গর্ভাবস্থায় খাওয়া উচিত নয়
কারণ সেগুলো আপনার এবং আপনার শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। যেমনঃ
বেগুন, সজিনা, এলোভেরা, কাঁচা পেঁপে ইত্যাদি।
গর্ভাবস্থায় ঘুম গুরুত্বপূর্ণ কেন
গর্ভাবস্থায় ঘুম গুরুত্বপূর্ণ কেন এ বিষয়টা আমরা অনেকেই বুঝতে পারি
না। ঘুমের সময় শরীরের বিশ্রাম হয় এবং পরবর্তী সময়ের জন্য শরীর অনেকটাই
শক্তি পাই। ঘুমানোও শিশুর শারীরিক মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সঠিক ঘুমের অভাব গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন জটিলতা
সৃষ্টি করতে পারে।গর্ভাবস্থায় শরীরের উপর বাড়তি চাপ পড়ে যা পর্যাপ্ত ঘুমের
মাধ্যমে দূর হয়।
সঠিক ঘুম মায়ের ইমিউন সিস্টেমকে সচল রাখে, যা ইনফেকশন থেকে সুরক্ষা
দেয়। ঘুম হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা মায়ের
মানসিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গভীর ঘুম শিশুর মস্তিষ্ক ও
স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সাহায্য করে।সঠিক ঘুম মায়ের মানসিক চাপ কমিয়ে
ডিপ্রেশন ও অ্যানজাইটির ঝুঁকি হ্রাস করে।
ঘুমের ঘাটতি প্রি- এক্ল্যামসিয়া বাড়িয়ে দিতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবই ইমম্যাচিউর বাচ্চা জন্মের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানো ও
জাগ্রত হওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। সঠিকভাবে পাশ ফিরে ঘুমাতে হবে কারণ
এটি রক্ত প্রবাহ ঠিক রাখে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন এড়িয়ে চলতে হবে।গর্ভাবস্থায়
সঠিক ঘুম শুধু মায়েরই নয়, শিশুর ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভাবস্থায় না খেয়ে থাকলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় না খেয়ে থাকলে কি হয় তা আমরা সকলেই অবগত।গর্ভাবস্থায় না খেয়ে
থাকলে মা এবং গর্ভস্থ শিশু উভয়েরই জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি হতে
পারে। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে মায়ের শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও এনার্জি
কমে যায়, যার কারনে মাথা ঘুরায় ও শরীর দুর্বল লাগে। পর্যাপ্ত খাবার
না খেলে আয়রন ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানের অভাব হয় যে জন্য
রক্তশূন্যতা তৈরি হতে পারে।
না খেয়ে থাকলে পুষ্টির অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। পর্যাপ্ত
পুষ্টি না পেলে শিশুর বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয় যার ফলে শিশুর ওজন কমে যেতে
পারে। , দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে শিশুর সময়ের আগেই জন্ম নেওয়ার ঝুঁকি
বেড়ে যায়। শিশুর বুদ্ধিও মানসিক বিকাশে সঠিক পুষ্টি
গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টির অভাব শিশুর মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
মা যদি দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকে তবে শরীরের রক্তের শর্করার মাত্রা কমে যায় এর
ফলে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে, যা মাথা ঘোরা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বা
অন্যান্য গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য নিয়মিত খাবার গ্রহণ করা
দরকার। দিনে তিন বেলা খাবারের পাশাপাশি দুই থেকে তিনবার হালকা নাস্তা খাওয়া
দরকার।
বেশি সময় না খেয়ে থাকার পর যদি খারাপ লাগে দ্রুত কিছু হালকা খাবার খেয়ে নিতে
হবে। গর্ভাবস্থার বিশেষ ডায়েট প্ল্যান ও পরামর্শের দরকার হলে
চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া উচিত। শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য
গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর পুষ্টি অপরিহার্য। মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য
খাবারের বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থায় কতটুকু ঘুমের প্রয়োজন
গর্ভাবস্থায় কতটুকু ঘুমের প্রয়োজন এ বিষয়টি আমাদের জানা
উচিত। গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত ঘুম মায়ের এবং গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার
জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত গর্ভবতী মায়েদের দিনে অন্তত ৭ থেকে ৯
ঘন্টা ঘুমানো উচিত তবে এর চাহিদা ব্যক্তিবেদে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। প্রথম
তিন মাস শরীরে প্রোজেস্টেরন হরমোনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় ফলে ঘুম বেড়ে যায়।
গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয় তা আমরা সকলেই জানি। এ সময় ৮ থেকে ১০ ঘন্টা
ঘুম প্রয়োজন হয়। গর্ভকালীন দ্বিতীয় তিন মাস অর্থাৎ চার থেকে ছয় মাস
এ সময়ে ঘুমের ধরন কিছুটা পরিবর্তন হয় এবং মায়েরা তুলনামূলক ভালো ঘুমাতে
পারেন। তবে রাতে অন্তত সাত থেকে আট ঘন্টা এবং দিনের বেলা প্রয়োজন মত
বিশ্রাম নেওয়া উচিত।
পরের তিন মাস অর্থাৎ সাত থেকে নয় মাস এ সময়ে ঘুমের সমস্যা কিছুটা বেড়ে যায়,
যেমন পিঠে ব্যথা, পেটের ভার বা ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রয়োজন হয়। এজন্য অনেক
সময় ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। সেজন্য এ সময়ে রাতে সাত ঘন্টা এবং দিনের বেলা
হালকা বিশ্রাম অর্থাৎ ১ থেকে ২ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। ঘুম কম হলে অনেক রকম
সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ঘুমের ঘাটতি হলে মায়ের ও গর্ভস্থ শিশুর উভয়ের স্বাস্থ্যের উপর
ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। মায়ের ক্লান্তি ও মানসিক চাপ বাড়তে
পারে। উচ্চ রক্তচাপ বা প্রি একলামসিয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে। রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। অপর্যাপ্ত ঘুম শিশুর বিকাশে সমস্যা
হতে পারে। অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে গর্ভকালীন ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এজন্য যাতে ভালো ঘুম হয় সে চেষ্টা করা উচিত। ভাল ঘুম আসার জন্য বাম কাজ
হয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করতে পারেন। এটি রক্ত সঞ্চালন ও অক্সিজেন সরবরাহ করে
থাকে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করা দরকার। ঘুমানোর আগে
ভারী খাবার না খেয়ে হালকা খাবার বা দুধ খাওয়া উচিত। পর্যাপ্ত ঘুম এবং
বিশ্রাম মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য অত্যন্ত জরুরি।
গর্ভাবস্থায় কতটুকু হাঁটা উচিত
গর্ভাবস্থায় কতটুকু হাঁটা উচিত সেটা আমাদের জানা
দরকার। কারণ গর্ভাবস্থায় হাঁটা এবং কার্যকর ব্যায়াম করা, যা মা
এবং গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে
হাঁটার পরিমাণ নির্ভর করে শারীরিক অবস্থা গর্ভাবস্থার পর্যায় এবং চিকিৎসকের
পরামর্শের উপর। প্রতিদিন নিয়ম করে হাঁটলে শরীরের জন্য ভালো।
শুরুর দিকে অর্থাৎ গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ মিনিট
হাঁটলেই যথেষ্ট। ধীরে ধীরে এই সময়সীমা বাড়ানো যেতে পারে। পরের তিন
মাস অর্থাৎ চার থেকে ছয় মাস এই সময় শরীর তুলনামূলক ভালো থাকে ফলে প্রতিদিন ৩০
থেকে ৪৫ মিনিট হাঁটলেও হয়। তবে হাঁটার গতি হালকা রাখতে হবে এবং ক্লান্তি
এলে বিশ্রাম নিতে হবে।
গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাস প্রতিদিন 15 থেকে 20 মিনিট ধীরে ধীরে হাঁটা
যথেষ্ট। এ সময়ে শরীর অনেক ভারী হয়ে যায় সেজন্য হাটার সময় সঙ্গী বা
সাহায্যকারী নিয়ে হাটা উচিত। হাঁটলে হজম শক্তি উন্নত হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য
ও গ্যাস কম হয়।হাঁটার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। হাঁটলে অতিরিক্ত
ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
হাঁটলে গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে। হাঁটার ফলে স্ট্রেস ও মানসিক
চাপ কম হয়। নিয়মিত হাঁটলে পেলভিসের প্রেসি শক্তিশালী হয় যার নরমাল
ডেলিভারির জন্য সহজ হয়। নিয়মিত হাঁটার ফলে গর্ভস্থ শিশুর কাছে পর্যাপ্ত
অক্সিজেন এবং পুষ্টি পৌঁছাতে সুবিধা হয়। হাঁটার সময় ধীর গতিতে এবং
আরামদায়ক গতিতে হাঁটতে হবে।
আরামদায়ক পোশাক এবং গ্রিপযুক্ত জুতা পায়ে দিয়ে হাঁটতে হবে। হাঁটার আগে ও
পরে পানি খেতে হবে যাতে করে ডিহাইড্রেশন না হয়। হাঁটতে গিয়ে অতিরিক্ত
ক্লান্তি অনুভব করলে সঙ্গে সঙ্গে বসে যেতে হবে। হাঁটার সময় রাস্তা খেয়াল
রাখতে হবে এবং খোলা জায়গায় হাঁটতে হবে। হাঁটার সময় সমস্যা অনুভব করলে
চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
গর্ভাবস্থার ডানকাত হয়ে ঘুমানো
গর্ভাবস্থায় ডানকাত হয়ে ঘুমানো নিয়ে বড় কোন ধরনের সমস্যা হয় না তবে বাম কাত
হয়ে ঘুমানো বেশি স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ বলেন ডাক্তাররা। ডান কাত হয়ে
ঘুমালে প্রধান রক্তনালির ওপর চাপ পড়তে পারে। এটি রক্ত সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি
করতে পারে এবং গর্ভস্থ শিশুর কাছে পুষ্টি ও অক্সিজেন পৌঁছানোতে প্রভাব পড়তে
পারে।
ডান দিকে কাত হয়ে ঘুমালে পাকস্থলী থেকে এসিড উপরে উঠে বুক জ্বালাপোড়া করতে
পারে। শরীরের ডান দিকে চাপ বেশি পড়লে পা বা পায়ের পাতা ফুলে যেতে পারে এবং
ফুলার কারনে অস্বস্তি হতে পারে।গর্ভাবস্থার শেষ সময় ডান দিকে ঘুমালে অতিরিক্ত
ওজনের কারণে পিঠে চাপ পড়তে পারে।এজন্য চিকিৎসকরা গর্ভাবস্থায় বামকাত হয়ে ঘুমাতে
বলেন।
বাম কাত হয়ে ঘুমালে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় এবং গর্ভস্থ শিশুর কাছে বেশি পুষ্টি ও
অক্সিজেন সহজে পৌঁছাই। বাম কাধ ধুয়ে ঘুমালে কিডনির কার্যকারিতা ভালো
থাকে যা শরীর থেকে বর্জ্য এবং অতিরিক্ত তরল বের করতে সাহায্য করে।এটি পা ফোলার
ঝুঁকি কমায়। বামদিকে ঘুমালে হৃদযন্ত্রের ওপর চাপ কম পড়ে এবং শরীর
স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে।
মাঝে মাঝে ডানকাত হয়ে ঘুমালে তেমন কোন ক্ষতি হয় না। তবে দীর্ঘ সময় একই
দিকে না শোয়ায় ভালো। ঘুমের সময় মাঝেমাঝে পাশ পরিবর্তন করা
উচিত। যদি ডানদিকে ঘুমানো আরামদায়ক মনে হয় তবে তাতে খুব বেশি দুশ্চিন্তা
করবেন না। এক্ষেত্রে পেটের নিচে বা পায়ের মাঝখানে একটি বালিশ রাখুন যার
ঘুমের অবস্থান ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
লেখক এর মন্তব্যঃ গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয় এ বিষয়টি আমাদের সকলের মাথায় রাখা
উচিত। কেননা এ বিষয়ে সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারণা না থাকলে আমরা কোন
সমস্যা হলে সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারব না।গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে বিভিন্ন রকম
ক্ষতি হতে পারে এজন্য আমাদের গর্ব অবস্থায় সুস্থতা বজায় রাখতে বিশ্রাম এবং
শারীরিক কার্যকলাপ এর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে হবে।
গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে অনেক ধরনের সমস্যা হয়। এ বিষয়টি মাথায় রেখে একজন গর্ভবতী মা কে সবসময়
পর্যবেক্ষণে রাখা উচিত। এ সময় গুরুত্বপূর্ণ হলো মা ও শিশুর সুস্থতা বজায়
রাখা।গর্ভাবস্থায় একজন মা সুস্থ থাকলে গর্ভস্থ শিশুর সুস্থ থাকে এটাই আমরা
আশা করি। এজন্য এ সময় একজন মাকে সর্বোচ্চ সুস্থ রাখার চেষ্টা করতে হয়।
আর এস ড্রিমস ব্লগেনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url