শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির কার্যকারী উপায়

চিয়া সিডের উপকারিতা ও অপকারিতাশীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির কার্যকারী উপায় হল অন্যান্য সময়ের চাইতে শীতকালে ত্বকের যত্ন বেশি নিতে হবে। কারণ শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং উজ্জ্বলতা কমে যায়।তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখা সম্ভব।

শীতে-ত্বকের-উজ্জলতা-বৃদ্ধির-কার্যকরী-উপায়

আপনারা কি শীতকালে ত্বক নিয়ে চিন্তিত? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য শীতকালে আমরা সকলেই কমবেশি ত্বক নিয়ে চিন্তিত থাকি। কারণ শীতকালে আমাদের ত্বক অত্যন্ত শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়।

পেজ সূচীপত্রঃ শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির কার্যকারী উপায়

শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির কার্যকারী উপায়

শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির কার্যকারী উপায় হচ্ছে ত্বকের বেশি বেশি যত্ন নেওয়া। শীতকালে ত্বকের উজ্জ্বল করতে আমরা ত্বকের যত্ন নেব ভালোভাবে। শীতকালে ত্বককে উজ্জ্বল করতে আমরা কিভাবে ত্বকের যত্ন নিব আজকের এই আর্টিকেলটি সেই বিষয় নিয়েই লিখেছি। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক শীতকালে কিভাবে ত্বকের যত্ন করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।

শীতে টক শুষ্ক হয়ে পড়া এবং উজ্জ্বলতা কমে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। কারণ শীতের আবহাওয়া টা এমন যা ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট করে। তবে আমরা যদি ত্বকের কিছুটা যত্ন বেশি নেই তাহলে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখা সম্ভব। ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য কিছু উপায় বর্ণনা করা হলোঃ

  • ত্বক আদ্র রাখুনঃ শীতের সময় ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার খুবই জরুরী।গোসলের পর ও রাতে ঘুমানোর আগে তোকে ময়েশ্চারাইজার অবশ্যই ব্যবহার করবেন। অলিভ অয়েল নারকেল তেল বা বাদাম তেল প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
  • পানি পান করুনঃ শীতে পানি পান করা কমে যায় যা ত্বকের আদ্রতা কমিয়ে দেয়। প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে। ত্বকের ভেতর থেকে আদ্রতা ধরে রাখতে হালকা গরম পানি পান করতে পারেন।
  • এক্সফোলিয়েশন করুনঃ মৃত কোষ দূর করতে সপ্তাহে এক থেকে দুইবার ত্বক এক্সফোলিয়েশন করুন।হিসেবে চিনি ও মধুর মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন। অতিরিক্ত স্ক্রাব করা থেকে বিরত থাকুন কারণ এতে ত্বক আরো শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
  • মাস্ক ব্যবহার করুনঃ শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে ঘরোয়া ফেস মাস্ক খুবই কার্যকরী। মধু ও দুধের মিশ্রণ ত্বকে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে পারেন। শসা ও দইয়ের মাস্ক ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
  • সানস্ক্রিন ব্যবহার করুনঃ মনে হলেও ইউভি রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে পারেন।  সান্তাস্ক্রিন এর ক্ষেত্রে SPF-30 বা তার  উপরের সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন।
  • সুস্থ খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখুনঃ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে ভিটামিন ও মিনারেল সমৃদ্ধ খাবার খাবেন।ভিটামিন সি যুক্ত খাবার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। বাদাম, মাছ, ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড ত্বককে নরম ও মসৃণ রাখে।
  • গরম পানিতে বেশি সময় গোসল এড়িয়ে চলুনঃ গরম পানির ত্বকে শুষ্ক করে দেয়। হালকা গরম পানিতে গোসল করতে পারেন তবে দ্রুত গোসল শেষ করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন।
  • লিপবাম ও হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার করুনঃ শীতে ঠোঁট ও হাত শুষ্ক হয়ে পড়ে। ঠোঁটে ময়শ্চারাইজিং লিপবাম এবং হাতে পুরু করে হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার করুন।
  • বায়ু দূষণ থেকে ত্বক রক্ষা করুনঃ শীতে ধুলা ও দূষণ বেশি হয় যা ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট করে। বাইরে থেকে ফিরে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে সেক্ষেত্রে মাইল্ড ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে হবে।

এভাবে নিয়মগুলো মেনে চললে শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় থাকবে এবং ত্বক স্বাস্থ্যকর থাকবে।

কোন ভিটামিনের অভাবে ত্বক শুষ্ক হয়

কোন ভিটামিনের অভাবে ত্বক শুষ্ক হয় এ বিষয়টা আমরা অনেকেই জানিনা। ত্বক সুস্থ হওয়ার অন্যতম কারণ ত্বকে ভিটামিনের অভাব। আমরা যদি জানি কোন ভিটামিনের অভাবে আমাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় তাহলে আমরা সে অনুযায়ী ত্বকের যত্ন নিতে পারব। চলুন জেনে নেয়া যাক কোন কোন ভিটামিনের অভাবে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

  • ভিটামিন এঃ ভিটামিন এ ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটির অভাবে ত্বক শুষ্ক খসখসে হয় এবং ফেটে যেতে পারে।
  • ভিটামিন ইঃ এটি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ত্বককে ময়েশ্চারাইজ রাখতে সাহায্য করে। এর অভাবে ত্বক হয়ে যেতে পারে।
  • ভিটামিন ডিঃ এর অভাবে ত্বক শুষ্ক এবং খসখসে হতে পারে বিশেষ করে শীতকালে।
  • ভিটামিন সিঃ ভিটামিন সি ত্বকে কোলাজেন উৎপাদনের সাহায্যকে। ভিটামিন সি এর অভাবে ত্বক রুক্ষ হয়ে যেতে পারে এবং ত্বক আদ্রতা হারায়।

 আরো পড়ুনঃ মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা

ত্বক শুষ্ক হলে যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করুন, সঠিক পুষ্টি গ্রহণ করুন এবং ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। তাহলে দেখবেন আপনার ত্বক উজ্জ্বল হয়ে উঠবে এবং আদ্রতা ফিরে পাবে।

শীতকালে মুখে কি মাখা উচিত

শীতকালে মুখে কি মাখা উচিত এ বিষয়টাও আমরা অনেকেই জানিনা। শীতকালে মুখের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় তাই এ সময়ে সঠিক যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শীতকালে মুখের আদ্রতা ধরে রাখার জন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হয়। আসলে শীতকালে মুখে কি মাখা উচিত সে বিষয়ে বর্ণনা করা হলোঃ

  • ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারঃ শীতকালে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য হালকা ওয়াটার বেসড ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। যাদের ত্বক শুষ্ক তাদের জন্য ক্রিমবেজড ময়েশচারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
  • তেল ব্যবহারঃ প্রাকৃতিক তেল যেমন নারকেল তেল, বাদাম তেল বা অলিভ অয়েল রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করতে পারেন। ত্বক যদি খুব শুষ্ক হয় তবে মুখ ধোয়ার পর সামান্য তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • সানস্ক্রিন ব্যবহারঃ শীতকালেও সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বক সুরক্ষিত রাখতে SPF-30 বা তার বেশি যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
  • এলোভেরা জেলঃ প্রাকৃতিক অ্যালোভেরা জেল ত্বকের আর্দ্রতা জোগাতে খুবই কার্যকরী। তাই শীতকালে আপনি নিয়মিত অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন।
  • হালকা স্ক্রাবার ও মাইল্ড ক্লিনজারঃ সপ্তাহে একবার হালকা স্ক্রাব ব্যবহার করে মৃত কোষ দূর করতে পারেন। মুখ ধোয়ার জন্য অতিরিক্ত শুকনো করে না এমন মাইল্ড ক্লিনজার ব্যবহার করবেন।

প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ত্বকের যত্নঃ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নিতে পারেন। যেমন দুধ ও মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে লাগাতে পারেন এটা খুবই কার্যকারী। শসার রস এটা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী এটি ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। শীতকালে বেশি বেশি পানি পান করুন এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খান। তাহলে ত্বক আদ্র থাকবে।

শীতে ত্বকের জন্য কোন ক্রিম ভালো

শীতে ত্বকের জন্য কোন ক্রিম ভালো এটা আমাদের অনেকেরই জানা থাকে না। শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে এবং আদ্রতা হারায়। তাই এমন ক্রিম ব্যবহার করা উচিত যা ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে এবং ময়েশ্চারাইজিং করে। নিজে কিছু ভালো ক্রিমের নাম এবং গুণাবলী উল্লেখ করা হলোঃ

সেরা ক্রিমের ধরনঃ

  • হাইড্রেটিং ক্রিমঃ হাইয়ালুর নেক অ্যাসিডযুক্ত ক্রিম ত্বককে গভীর থেকে মশ্চারাইজ করে।
  • গ্লিসারিনযুক্ত ক্রিমঃ গ্লিসারিনযুক্ত ক্রিম ত্বকে আদ্রতা ধরে রাখার জন্য অত্যন্ত কার্যকরী।
  • শিয়া বাটার বা কোকো বাটার যুক্ত ক্রিমঃ শিয়া বাটার বা কোকো বাটার যুক্ত ক্রিম ত্বককে শুষ্ক ও রুক্ষতার হাত থেকে রক্ষা করে।
  • সেরামাইড সমৃদ্ধ ক্রিমঃ সেরামাইড সমৃদ্ধ ক্রিম ত্বকের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • ভিটামিন ই বা অ্যালোভেরা ক্রিমঃ ভিটামিন ই বা অ্যালোভেরা যুক্ত ক্রিম টককে নরম এবং মসৃণ রাখে। 

শীতে-ত্বকের-উজ্জলতা-বৃদ্ধির-কার্যকরী-উপায়

জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের নামঃ

  • নিভিয়া সফট ক্রিমঃ শুষ্ক ত্বকের জন্য হালকা এবং আদ্রতা যুক্ত এই ক্রিমটি ত্বকের জন্য অনেক উপকারী।
  • পন্ডস কোল্ড ক্রিমঃ শীতে টক নরম রাখার জন্য ক্লাসিক পছন্দ এই ক্রিমটি।
  • হিমালয়া হারবালচারাইজিং ক্রিমঃ এই ক্রিমটি প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ জাতকে ময়েশ্চারাইজ রাখে এবং উজ্জ্বল করে।
  • ডাব নারিশিং ক্রিমঃ এটি ত্বককে গভীরভাবে ময়েশ্চারাইজ করে।
  • সেটাফিল ময়েশচারাইজারঃ এই ক্রিমটি সংবেদনশীল ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
  • ল্যাকমি পিচ মিল্ক ময়শ্চারাইজারঃ এই ক্রিমটি খুব হালকা এবং আদ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
  • অলিভ অয়েল বেজড ক্রিমঃ এই ক্রিমটি শীতকালে খুবই কার্যকারী। । এটি ব্যবহারে ত্বক আর্দ্র থাকে মসৃণ হয় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।

প্রাকৃতিক বিকল্পঃ নারকেল তেল বা বাদাম তেল এলোভেরা জেল মধু এবং দুধের মিশ্রণ এসব ব্যবহার করে আপনি শীতকালে প্রাকৃতিক ভাবে আপনার ত্বকের যত্ন নিতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ  মিল্কশেক এর ১০টি উপকারীতা ও অপকারীতা

টিপসঃ শীতকালে মুখ ধোয়ার পর পরই ক্রিম ব্যবহার করুন যেন তোকে আদ্রতা বজায় থাকে। রাতে ঘুমানোর আগে ভালোভাবে ক্রিম মুখে লাগিয়ে ঘুমান।ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্রিম বেছে নিন। টক কমল ও উজ্জ্বল রাখতে প্রতিদিন নিয়মিত ব্যবহার করুন।

শীতকালে দিনে মুখে কি মাখা উচিত

শীতকালে দিনে মুখে কি মাখা উচিত এ নিয়ে আমাদের সকলের ভাবনা। শীতকালে দিনে ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখা এবং শুষ্কতা প্রতিরোধের জন্য সঠিক যত্ন নেয়া জরুরি। দিনের বেলায় মুখে কি মাখা উচিত তা নিচে আলোচনা করা হলোঃ

  • ময়েশ্চারাইজারঃ শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় তাই একটি হাইড্রেটিং ময়েশ্চারাইজার মুখে ব্যবহার করা উচিত। শুষ্ক ত্বকের জন্য শিয়া বাটার বা গ্লিসারিন যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা দরকার।তৈলাক্ত ত্বকের জন্য হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
  • সানস্ক্রিন ব্যবহারঃ শীতকালেও সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। তাই SPF-30 বা তার বেশি যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। ময়েশ্চারাইজার মাখার পর সানস্ক্রিন মাখুন।
  • প্রাকৃতিক তেলঃ ত্বকের শুষ্কতা কমানোর জন্য হালকা নারকেল তেল বা বাদাম তেল ব্যবহার করতে পারেন। এটি ময়েশ্চারাইজার যার ব্যবহারের আগে বা পরে ব্যবহার করতে পারেন।
  • BB বা CC ক্রিমঃ হালকা মেক আপ এবং আদ্রতা ধরে রাখার জন্য দিনের বেলা  BB বা CC ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।
  • ঠোঁটের যত্নঃ ঠোট ফাটলে লিপবাম ব্যবহার করুন। শিয়া বাটার বা ভেসলিন যুক্ত লিপবাম ঠোঁটের জন্য ভালো।
  • প্রাকৃতিক উপাদানঃ প্রাকৃতিক উপাদান যেমন এলোভেরা জেল মধু ইত্যাদি দিয়েও আপনি দিনের বেলায় ত্বকের যত্ন নিতে পারেন। এলোভেরা জেল মুখে ময়েশচার হাজার হিসেবে কাজ করে এবং ত্বককে নরম রাখে। মধু ত্বক নরম করতে এবং আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
  • মুখে ক্রিম মাখার আদর্শ রুটিনঃ সকালে মুখ ধুয়ে মুখে ময়েশচারাইজিং ক্রিম লাগান। তারপর সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। যদি বাইরে যান সে ক্ষেত্রে হালকা প্রাকৃতিক মেকআপ ব্যবহার করতে পারেন। দিনে পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং আর্দ্র পরিবেশ বজায় রাখুন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্রিম বেছে নিন এবং প্রতিদিন এই রুটিন অনুসরণ করন।

শীতকালে মুখ কালো হয়ে যায় কেন

শীতকালে মুখ কালো হয়ে যায় কেন এ বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেকে চিন্তিত থাকি। শীতকালে মুখ কালো হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো ত্বকের আদ্রতা কমে যাওয়া এবং পর্যাপ্ত যত্নের অভাব। আমরা যদি সঠিকভাবে আমাদের ত্বকের যত্ন নেই তাহলে শীতকালে মুখ অতটাও কালো হবে না। শীতকালে মুখ কালো হওয়ার কারণ নিচে দেওয়া হলঃ

মুখ কালো হওয়ার কারণঃ

  • ত্বকের শুষ্কতাঃ শীতে বাতাসের আদ্রতা কম থাকায় ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায় যার কারণে মুখ অনুজ্জ্বল এবং কালো দেখায়।
  • ডিহাইড্রেশনঃ কোম্পানি পান করার জন্য ত্বক আদ্রতা হারায় এবং রুক্ষ দেখায় এ কারণে শীতকালে মুখ কালো হয়ে যায়।
  • মৃত কোষ জমে যাওয়াঃ শীতে সঠিকভাবে এক্সফোলিয়েশন না করলে মৃত কোষ জমে ত্বক কালচে দেখায়। 
  • সূর্যের ক্ষতিঃ শীতকালেও সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের রঙে প্রভাব ফেলে এবং কালচে দাগ তৈরি করতে পারে।
  • সঠিক যত্নের অভাবঃ শীতকালে সঠিক যত্নের অভাবের কারণে ত্বক কালো দেখায়। শীতে ময়েশচারাইজার এবং সানস্ক্রিন ব্যবহার না করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে কালচে দেখায়।
  • পরিবেশগত প্রভাবঃ শীতের শুষ্ক ও ধুলাবালির পরিবেশের কারণে ত্বক প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা হারায় সেজন্য ত্বক কালো দেখায়।

সমাধান ও প্রতিকারঃ শীতে মুখ কালো কেন হয়ে যায় এটার জন্য কি সমাধান আছে এবং এর প্রতিকার কি এ বিষয় নিয়ে এখন আলোচনা করব

  • ত্বক হাইড্রেট রাখাঃ প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং হাইড্রেটিং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  • ময়েশচারাইজার ব্যবহারঃ গ্লিসারিন, সিয়া বাটার বা অ্যালোভেরা সমৃদ্ধ ময়েশচারাইজার দিনে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করুন।
  • সানস্ক্রিন ব্যবহারঃ শীতকালেও SPF-30 বা তার বেশি যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এটি UV রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আপনার ত্বককে রক্ষা করবে।
  • ত্বকের এক্সফোলিয়েশনঃ সপ্তাহে এক থেকে দুইবার মিহি দুই স্ক্রাব ব্যবহার করুন মৃত কোষ দূর করার জন্য।
  • প্রাকৃতিক ফেসপ্যাকঃ প্রাকৃতিক ফেসপ্যাক যেমন মধু ও দুধের ফেসপ্যাক তৈরি করে  মুখে লাগান যা ত্বক নরম ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে। টমেটোর রস দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করেও মুখে লাগাতে পারেন যা প্রাকৃতিক ব্রিচ হিসেবে কাজ করে।
  • স্বাস্থ্যকর খাবারঃ ভিটামিন এ সি এবং ই সমৃদ্ধ খাবার যেমন গাজর কমলা আমলকি ইত্যাদি খেতে পারেন যা আপনার ত্বককে স্বাস্থ্যকর রাখবে।
  • ধুলোবালি এড়ানোঃ বাইরে থেকে এলে ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করুন এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

টিপসঃ ঠান্ডা পানির পরিবর্তে হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন। রাতে ঘুমানোর আগে ভালো মানের নাইট ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন কারন এগুলো ত্বকের উজ্জ্বলতা নষ্ট করে। এই নিয়মগুলো মেনে চললে শীতকালে ত্বক উজ্জ্বল ও সজীব থাকবে।

শীতে ফর্সা হওয়ার উপায়

শীতে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা এবং রুপকথার কারণে ত্বক অনুজ্জ্বল ও কালচে দেখায়। তবে কিছু যত্নের মাধ্যমে ত্বককে উজ্জ্বল এবং সজীব রাখা সম্ভব। নিচে শীতে ফর্সা বা উজ্জ্বল ত্বক পেতে করণীয় কিছু বিষয় উল্লেখ করা হলোঃ

  • ত্বক আদ্র রাখাঃ শীতকালে ত্বক শুষ্ক হওয়া প্রতিরোধ করতে ত্বক প্রতিদিন ময়েশ্চারাইজ করুন। এজন্য গ্লিসারিন, সিয়া বাটার বা অ্যালোভেরা সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  • নিয়মিত এক্সফোলিয়েশনঃ সপ্তাহে ১-২ বার হালকা স্ক্রাব ব্যবহার করুন মৃত কোষ দূর করার জন্য।প্রাকৃতিক স্ক্রাবার তৈরি করতে চিনি ও মধুর মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন।
  • প্রাকৃতিক ফেসপ্যাকঃ কিছু ঘরোয়া উপায় যা ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করবে। মধু ও দুধের ফেসপ্যাক তৈরি করে মুখে লাগান। ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। এতে টক অনেকটা উজ্জ্বল হবে। টমেটো রসের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগান। এটি প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে কাজ করবে।
  • বেসন, হলুদ ও দুধের ফেসপ্যাকঃ বেসন, হলুদ এবং কাঁচা দুধ মিশিয়ে একটি পেস্ট বানান। তারপর মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে মুখে তৈরি করা পেজটি ভালোভাবে লাগিয়ে রাখুন। মুখে দেওয়া ফেসপ্যাকটি শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন আপনার মুখ অনেকটাই ফর্সা দেখাচ্ছে।
  • পর্যাপ্ত পানি পানঃ শীতে অনেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করেন না যা ত্বককে শুষ্ক করে ফেলে।প্রতিদিন অন্তত.৮-১০ গ্লাস পানি পান করবেন। তাহলে আপনার ত্বক আদ্র থাকবে।
  • সঠিক খাবারঃ ভিটামিন সি এবং ই সমৃদ্ধ খাবার খান যেমন  কমলা, লেবু, গাজর, আমলকি এবং বাদাম।শীতকালে মৌসুমী ফল ও সবজি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • ত্বক পরিষ্কার রাখাঃ বাইরে থেকে এলে মাইল্ড ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। মুখ পরিষ্কার করার পরে ত্বকে টোনার ব্যবহার করুন। তারপর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
  • পর্যাপ্ত ঘুমঃ প্রতি রাতে.৭-৮ ঘন্টা ঘুম নিশ্চিত করুন। পর্যাপ্ত ঘুম ত্বককে ফ্রেশ এবং উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
  • অতিরিক্ত গরম পানি এড়িয়ে চলুনঃ গরম পানিতে মুখ ধুলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। গরম পানিতে মুখ ধুলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। তাই অতিরিক্ত গরম পানি ব্যবহার না করে হালকা গরম পানি ব্যবহার করুন।

 আরো পড়ুনঃগর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয় 

উপরের এই নিয়মগুলো মেনে চললে শীতকালেও ত্বক উজ্জ্বল নরম এবং সুস্থ থাকবে। নিয়মিত ত্বকের যত্নই প্রকৃত সৌন্দর্য ধরে রাখার একমাত্র চাবিকাঠি।

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কোন ময়েশচারাইজার ভালো

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কোন ময়েশ্চারাইজার ভালো এটা নিয়েও অনেকে চিন্তিত থাকেন যাদের ত্বক তৈলাক্ত। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের জন্য হালকা ওয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো। খায়ালু রনিক এসিডযুক্ত ময়েশচারাইজার এটি ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে এবং চটচটে লাগেনা। জেল ভিত্তিকচারাইজার দ্রুত শোষিত হয় এবং ত্বককে তৈলাক্ত করে না।

শীতে-ত্বকের-উজ্জলতা-বৃদ্ধির-কার্যকরী-উপায়

অ্যালোভেরা ভিত্তিক ময়েশ্চারাইজার ত্বককে আদ্র রাখে এবং ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। শালি চাইলেক এসিডযুক্ত ময়েশ্চারাইজার তৈলাক্ত ত্বকের পাশাপাশি ব্রণ প্রবণ ত্বকের জন্য উপকারী। ময়েশ্চারাইজার কেনার আগে ত্বকের ধরন এবং আপনার ত্বকের সমস্যা বুঝে পণ্যটি নির্বাচন করবেন।

হালকা ফেসওয়াস দিয়ে মুখ ধুয়ে তারপর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন। সুর্যের ক্ষতি থেকে ত্বক বাঁচাতে ময়েশ্চারাইজারের পর সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা এ ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে তাদের ত্বক তৈলাক্ত হবে না। এগুলো ব্যবহার করার পর তাদের ত্বক অনেক হালকা মনে হবে।

শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়

শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায় আমাদের ত্বককে ভালো রাখতে পারে। শুধুমাত্র যে বাইরের কেনা ক্রিম ব্যবহার করেই ত্বক ভালো থাকে এমন না। ঘরোয়া অনেক উপায় আছে যেগুলো করলে আমাদের ত্বক শীতকালে অনেক ভালো থাকে। শীতকালে ঘরোয়া উপায় কিভাবে আমরা ত্বকের যত্ন করব তার নিচে আলোচনা করা হলোঃ

  • দুধ ও মধুর মিশ্রণঃ দুধের সাথে মধু মিশিয়ে আপনার ত্বকে লাগান।১৫ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে দুধ ও মধু ব্যবহার করলে শীতকালে ত্বক আদ্র থাকে এবং প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল হয়।
  • নারিকেল তেলঃ রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকের সামান্য গরম নারিকেল তেল মেসেজ করতে পারেন।গরম তেল ম্যাসাজ করলে শুষ্ক ও ফাটা ত্বক মসৃণ ও নরম হয়.
  • এলোভেরা জেলঃতাজা এলোভেরা পাতা কেটে জেল বের করে ত্বকে লাগান এবং কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। এলোভেরা জেল ত্বককে ঠান্ডা ও হাইড্রেট রাখে।
  • বেসন ও দই এর প্যাকঃ বেসন ও দই এক সাথে মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এটি ত্বকে লাগিয়ে.২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি শুষ্ক ত্বকের জন্য বেশ কার্যকরী এবং ত্বকের ময়লা দূর করে।
  • কলা ও মধুর প্যাকঃ পাকা কলা ও মধু একসাথে চটকে একটি প্যাক তৈরি করুন। এটি ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে তারপরে ধুয়ে ফেলুন। কলা ও মধুর এই প্যাক ত্বককে মসৃণ ও নরম করে।
  • পর্যাপ্ত পানি পানঃ শীতকালে পর্যাপ্ত পানি পান না করার কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে।

পরামর্শঃ খুব গরম পানি দিয়ে গোসল করা থেকে বিরত থাকুন, কারণ এটি ত্বকের প্রাকৃতিক তেল শুষে নেয়। নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। সূর্যের ক্ষতি থেকে বাঁচতে শিখতেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। এভাবে নিয়ম করে ঘরোয়া ভাবে ত্বকের যত্ন নিলে আপনার ত্বক এমনিতেই ভালো থাকবে।

লেখক এর মন্তব্যঃ শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির কার্যকারী উপায়

শীতের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির কার্যকারী উপায় সম্পর্কে আমরা উপরে অনেক কিছু জানলাম। উপরের আলোচনা থেকে আশা করছি আপনারা অনেকটা উপকৃত হবেন। উপরের নিয়ম অনুযায়ী আপনার ত্বকের যত্ন নিলে শীতকালেও আপনার ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত থাকবে। শীতে আমাদের সবার ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় এবং পা ফাটার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

শীতে আমাদের ত্বকে উজ্জ্বল স্বাস্থ্যকর এবং প্রাণবন্ত রাখার জন্য আমরা আমাদের ত্বকের যত্ন নিব।সেটা হোক ঘরোয়া পদ্ধতিতে অথবা দোকানের কেনা ময়েশ্চারাইজার সানস্ক্রিন বিভিন্ন উপাদান দিয়ে। এ আর্টিকেলটি পুরোটা পড়ে আশা করছি আপনারা বুঝতে পেরেছেন শীতে কিভাবে যত্ন করলে আপনাদের ত্বক ভালো থাকবে।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আর এস ড্রিমস ব্লগেনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url