শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
আধুনিক যুগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি বিপ্লব ঘটিয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষার্থীদের জন্য জ্ঞানার্জন প্রক্রিয়াকে আরো আকর্ষণীয় কার্যকর এবং সহজ করে তুলেছে।এটার অনেক ব্যবহার রয়েছে।
পেজ সূচীপত্রঃ
- অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম
- শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং সহজলভ্যতা
- তথ্যপ্রযুক্তি কি
- শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব
- শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলতে কি বুঝায়
- শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
- শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অপব্যবহার
- শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির পাঁচটি ব্যবহার
- বিভিন্ন ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
- প্রাথমিক শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব
- লেখকের মন্তব্য
অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম
অনলাইন প্লাটফর্ম যেমন করসেরা, উডেমি, খান অ্যাকাডেমি, ১০ মিনিট স্কুল ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসে অনলাইন কোর্সে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং বিভিন্ন বিষয়ে সার্টিফিকেট অর্জন করতে পারে। ভার্চুয়াল ক্লাসরুম যেমনঃ জুম, গুগলমিট ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা শারীরিকভাবে উপস্থিত না থেকেও ভার্চুয়াল ক্লাসের মাধ্যমে সরাসরি ক্লাস করতে পারে।
ই-বুক, গবেষণাপত্র এবং ডিজিটাল লাইব্রেরির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিশ্বের বিভিন্ন
উন্মুক্ত প্লাটফর্ম থেকে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। Google
classroom, Edmodo, Moodle শিক্ষকদের জন্য ক্লাস রুম ম্যানেজমেন্ট এবং
শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট পরীক্ষাও প্রজেক্ট জমা দেওয়ার সুবিধা প্রদান
করে।
শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং সহজলভ্যতা
এনিমেশন, ভিডিও টিউটোরিয়াল এবং ইন্টারেক্টিভ কুইজের মাধ্যমে শিক্ষাকে আরও
আকর্ষণীয় ও সহজবোধ্য করা যায়। বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য অটোমেটেড গ্রেডিং
সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে যা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দ্রুত মূল্যায়ন করতে এবং
তাদের ফলাফল জানাতে সাহায্য করে।
শিক্ষার্থীরা যে কোন স্থানে এবং সময় শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে যা দূরবর্তী শিক্ষা
এবং মোবাইল লার্নিং এর মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ
প্রযুক্তির ব্যবহার করলে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে এবং শিক্ষার্থীদের নিকট তা
সহজলভ্য হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষাকে প্রসারিত করবে।
তথ্যপ্রযুক্তি কি
প্রযুক্তি বলতে বোঝায় তথ্য সংগ্রহ, সংস্করণ , বিশ্লেষণ , প্রক্রিয়াকরণ , উৎপাদন ও যোগাযোগের কাজে ব্যবহৃত প্রযুক্তিগত সকল উপকরণ। তথ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় প্রতিনিয়তই নতুন নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হচ্ছে। তবে বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত উপকরণ গুলোর মধ্যে রয়েছে কম্পিউটার ,মোবাইল ফোন ,ইন্টারনেট, স্যাটেলাইট, মাল্টিমিডিয়া ও টেলিভিশন ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার মূলত হার্ডওয়ার এবং সফটওয়্যার সম্পর্কিত জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করাকে বোঝায়। বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির সম্ভাবনা অনেক। আমরা যদি কর্মক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ঠিকভাবে করতে পারি তবে তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে আমাদের দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব
শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবদান অনস্বীকার্য। জীবন যাপনে সহজলভ্যতা আনার পাশাপাশি মানবসম্পদ উন্নয়নেও তথ্যপ্রযুক্তির ভূমিকা লক্ষ্য করা
যায়। একজন মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ
প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষাক্রম এর উদ্দেশ্য গুলো নিম্নে দেওয়া হলোঃ
- শিক্ষার্থীদেরকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুযোগ ও অসীম সম্ভাবনা সম্পর্কে অবগত করা
- তথ্যপ্রযুক্তির প্রভাবে ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির বিকাশ সাধন করা
- প্রযুক্তি ব্যবহার করে দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদেরকে সমর্থন করা
- ভাষাগত দক্ষতা বৃদ্ধি মেধা ও সৃজনশীলতার বিকাশে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তির ব্যবহারে অনুপ্রাণিত করা
- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নৈতিক আচরণের অভ্যাস গড়ে তোলা
- প্রযুক্তির মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করা, দারিদ্রতা বিমোচন এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের প্রতি উৎসাহ দেওয়া
শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার যদি নিশ্চিত করা যায় তবে উপরের
বিষয়গুলো একজন শিক্ষার্থীকে দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
আরো পড়ুনঃ ফেসবুকের মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম
শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলতে কি বুঝায়
আমাদের বাচ্চাদেরকে শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে
জানানো প্রয়োজন। বর্তমানে পুরো পৃথিবীটাকে যদি একটি মানবদেহ ভাবা হয় তাহলে তথ্য
ও যোগাযোগ প্রযুক্তি তার মস্তিষ্ক। ঠিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য
শিক্ষাকে যদি মানব শরীর ভাবা হয় তাহলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি তার মস্তিষ্ক
স্বরূপ।
এই কথা দ্বারা বোঝা যায় যে শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কতটা ভূমিকা পালন
করছে। আসলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে দুইটি ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম
অংশটি হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি এবং পরবর্তী অংশটি হচ্ছে যোগাযোগ প্রযুক্তি। তথ্য
সংগ্রহ করে এর সত্যতা, সংরক্ষণ, যাচাই, আধুনিকরণ, পরিবহন, বিতরণ এর সাথে জড়িত
প্রযুক্তিকে বলা হয় তথ্যপ্রযুক্তি।
যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে যে সকল বিষয় জড়িত রয়েছে তাকে যোগাযোগ ব্যবস্থা বলে। তাই শিক্ষনীয় কোন বিষয়বস্তু তথ্য প্রযুক্তির যে মাধ্যমে সংরক্ষিত করা রয়েছে ওই বিষয়বস্তুটিকে ডাটা কমিউনিকেশন অথবা যোগাযোগের মাধ্যমে যে প্রযুক্তির সৃষ্টি হয় তাকে শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বুঝায়।
শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
প্রাচীনকালে মানুষ পড়াশোনার জন্য তথ্য সংগ্রহ করে রাখত বিভিন্ন মাধ্যম গুলো
ব্যবহার করে। কিন্তু যুগের সাথে সাথে মানুষও পরিবর্তন হয়েছে। আর এই
পরিবর্তনের ধারায় মানুষ এখন অনেক উন্নত হয়েছে। একটি জাতিকে উন্নত করতে হলে তার
শিক্ষা ক্ষেত্র গুলোতে মনোযোগ দিতে হবে। আর বর্তমানে শিক্ষা ক্ষেত্র এগিয়ে চলেছে
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে।
যার ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। আর প্রত্যেকটি জাতি শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য
ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে সদ্ব্যবহার করে এর থেকে তথ্যগুলো বের করে জ্ঞান আহরণ
করছে। যে জাতি প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে যত উন্নত এবং শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি
সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিতে পেরেছে সেই জাতিগুলো পৃথিবীতে আজ শিক্ষাক্ষেত্র গুলোতে
অনেক এগিয়ে রয়েছে।
আপনি যদি জাপান, আমেরিকা ও কানাডার মত দেশগুলোর তালিকায় দেখেন কেন তাদের শিক্ষার
মান এতটা উন্নত। এর পিছনে বড় একটি কারণ হচ্ছে
প্রযুক্তিগত উন্নয়ন। তাদের আগামী প্রজন্মকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
কিভাবে শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবহার করলে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যাবে সে সম্পর্কে
তাদেরকে পর্যাপ্ত জ্ঞান দেওয়া হয়েছে।
তাই আসুন আমরাও জেনে নেই শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার করলে কিভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যাবে। বিশ্বের যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ঘরে বসে সংগ্রহ করা যায়।
- বিশ্বের বড় বড় প্রফেসরদের ক্লাস ও পরামর্শ ঘরে বসে গ্রহণ করা যায়
- ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে যেকোনো বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা যায়
- অসুস্থ অবস্থায় ক্লাসে না গিয়ে বাড়িতে বসে থেকে ক্লাসে অংশগ্রহণ করা যায়
- ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা গ্রুপ স্টাডি করতে পারে
- যে কোন বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করার জন্য অনলাইনের মাধ্যমে তথ্য সংরক্ষণ ও সংগ্রহ করে পড়া যায়
- যদি কোন বিষয় বুঝতে সমস্যা হয় তৎক্ষণাৎ বুঝার জন্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে জ্ঞান অর্জন করা যায়
- পড়াশোনার ক্ষেত্রে আর্থিক সমস্যা থাকলে ইউটিউব অথবা গুগল থেকে তথ্য সংগ্রহ বা ভিডিও দেখে পড়তে পারে
বর্তমান পৃথিবী শুধুমাত্র শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে
না। মানুষের দৈনন্দিন জীবনের ক্ষেত্রেও বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
ব্যাপকভাবে ব্যবহার হচ্ছে। তাই মানুষের চলার পথের একটি খুঁটি হিসেবে
দাঁড়িয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি। এটি ছাড়া শিক্ষা ক্ষেত্রে সহ আরো অনেক
বিষয়গুলো রয়েছে যেগুলোতে উন্নতি করা অসম্ভব।
তাই আমাদের সকলেরই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করে জীবনকে আরো সহজ ও উন্নত করে তুলতে হবে।
আরো পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে অনলাইন ইনকাম
শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অপব্যবহার
শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার শিক্ষা দিতে কে সহজে সমৃদ্ধ
করে। তবে শিক্ষাজীবনের প্রযুক্তির অপব্যবহার শিক্ষার্থীদেরকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে
দেয়। প্রযুক্তির খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো ইন্টারনেট। বর্তমান সময়ের
শিক্ষায় ইন্টারনেটের ব্যবহার ও গুরুত্ব অপরিসীম। তবে অধিকাংশ শিক্ষার্থী
শিক্ষার প্রয়োজন ছাড়াও অধিক সময় বিনা প্রয়োজনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে।
কম্পিউটার ও মোবাইল ব্যবহার করার ক্ষেত্রেও তাই ঘটে। প্রযুক্তি ব্যবহারের বিভিন্ন
ভালো দিক থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগ হারানোর
কারণ হয়ে দাঁড়ায় প্রযুক্তি। এজন্য শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার
রোধ করতে হবে।তাহলেই শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুক্তির প্রতিটি শিক্ষারথীকে
সমৃদ্ধ করবে।
শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির পাঁচটি ব্যবহার
আমাদের ব্যক্তিগত জীবন ও শিক্ষার যে বিষয়গুলো রয়েছে তার সবগুলো ক্ষেত্রে কোন না
কোন ভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে আমরা ব্যবহার করি। শিক্ষা ক্ষেত্রে
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির পাঁচটি ব্যবহার নিচে তুলে ধরা হলোঃ
- বইয়ের কোন বিষয় জানার জন্য পিডিএফ ফাইল ডাউনলোড করে পড়া যায়
- বিশ্বের যে কোন লাইব্রেরী থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বই ডাউনলোড করে পড়া যায়
- কোন বিষয়ে জানার জন্য ইউটিউব ভিডিও টিউটোরিয়াল দেখে জানা যায়
- শিক্ষা ক্ষেত্রে যে কোন বিষয়ে জানতে চাইলে অনলাইন এর মাধ্যমে তৎক্ষণাৎ জানা যায়
- প্রজেক্টর ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়
আরো পড়ুনঃ চিকিৎসা ক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার
বিভিন্ন ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার
পৃথিবীর মানুষের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে।, পৃথিবীর প্রায় অধিকাংশ মানুষ তাদের জীবন পরিচালনার জন্য তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার করে। যত দিন যাচ্ছে এর ব্যবহারের সংখ্যা তত বাড়ছে। কিন্তু এই প্রযুক্তিকে কেউ ভালো কাজে ব্যবহার করছে আবার অনেকেই খারাপ কাজেও ব্যবহার করছে। নিচে এর কিছু ব্যবহার দেখানো হলোঃ
শিক্ষা ক্ষেত্রেঃ পৃথিবীর শিক্ষার মানদন্ড উন্নত থেকে উন্নত করে তুলেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি। শিক্ষকরা তাদের শিক্ষার্থীদের যে কোন বিষয় উন্নতমানের শিক্ষা প্রদান করতে পারে। আর শিক্ষার্থীরা তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার করে তাদের পড়াশোনার মানকে উন্নত করতে পারে।
কম্পিউটারঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার হচ্ছে কম্পিউটার। এই কম্পিউটার পৃথিবীর পুরো মানদন্ড পরিবর্তন করে দিয়েছে। হয়তো কম্পিউটার না থাকলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পন্ন হতো না।
চিকিৎসা সেবাঃ প্রযুক্তির কল্যাণে বর্তমান সময়ের চিকিৎসার মান অনেক উন্নত হয়েছে। আগে মানুষ উন্নত চিকিৎসার অভাবে মারা যেতো। কিন্তু বর্তমানে এর সংখ্যা অনেক কমে এসেছে মানুষ যে কোন রোগের চিকিৎসা ঘরে বসে থেকে পাচ্ছে।
মহাকাশ গবেষণাঃ মানুষ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে মহাকাশে স্যাটেলাইট ও জেমস ওয়েট পাঠিয়েছে মহাকাশের তথ্য সংগ্রহ করার জন্য। শুধু তাই নয় প্রযুক্তির সাহায্যে চাঁদে পা রেখেছে এবং সেখান থেকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করেছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ বর্তমানে যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যানে মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক সহজ হয়ে গেছে। মানুষ ঘরে বসে থেকে ট্রেন অভিমানের টিকিট এবং সময়সূচী সম্পর্কে সব ধরনের ধারণা পেয়ে যাচ্ছে। এমনকি ঘরে বসে থেকে ট্যাক্সিও বাইক বুকিং দিতেও পারছে। যা থেকে মানুষ অতি সহজে একই স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তর করতে পারছে।টেলিভিশনঃ টেলিভিশনের মাধ্যমে বিভিন্ন সংবাদপত্র শুনতে ও দেখতে পাই। এর সাথে বিভিন্ন ধরনের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান উপভোগ করতেও পারে। এজন্য এটি তথ্য ও প্রযুক্তির একটি অন্যতম আবিষ্কার।
ইন্টারনেটঃ বর্তমান পৃথিবীতে ইন্টারনেট ছাড়া প্রযুক্তি অসম্পূর্ণ। তথ্য অথবা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে হলে আরো অন্যান্য কাজের জন্য ইন্টারনেট প্রয়োজন। তাই ইন্টারনেট আবিষ্কার মানুষের জীবনযাত্রাকে অনেক অনেক সহজ করে তুলেছে।
ব্যবসাঃ প্রাচীনকালে মানুষ ব্যবসা করতে নির্দিষ্ট একটি সীমানার মধ্যে। কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের ব্যবসাকে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে পারছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমঃ মানুষ আগে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের খোঁজ নিতে হলে তাদের কাছে চিঠি পাঠাতো। কিন্তু আধুনিক যুগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে জরুরী ভিত্তিতে যে কোন বিষয়ে যোগাযোগ করতে পারেন। পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে আপনার আত্মীয় থাক না কেন আপনি ঘরে বসে থেকে তাদের খোঁজ নিতে পারবেন।
প্রাথমিক শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব
প্রাথমিক শ্রেণীর শিক্ষার্থী হচ্ছে ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে যে সকল শিক্ষার্থী
রয়েছে। এই সময়টাই হচ্ছে উত্তম সময় কোন শিক্ষার্থীকে গড়ে তোলার জন্য। এ সময়
একটি শিক্ষার্থীকে যেদিক থেকে পরিচালনা করবেন ঠিক সেই দিকেই তারা অগ্রসর হবে।
তাদেরকে চাপ প্রয়োগ করে পড়াশোনা করানো যাবে না। তাদেরকে আনন্দের ছলে
পড়াশোনা করাতে হবে।
আর এজন্যই বর্তমান সময়ে প্রাথমিক শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব
বাড়ছে। এখন হাতে কলমে শিক্ষার পাশাপাশি প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে শিক্ষা প্রদান
করা হচ্ছে। বর্তমান সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আপনাকে এই সকল
শিক্ষার্থীদের গোড়া থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির আওতায় বড় করতে হবে।
প্রথমে তাদেরকে জানাতে হবে যে তথ্যপ্রযুক্তি কি এবং এর মাধ্যমে কিভাবে যোগাযোগ
করতে হয়। এ সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে তাদেরকে ধারণা দিন। প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির শিক্ষা কার্যক্রম শ্রেণী ভিত্তিক তৈরি করতে হবে। যেমন
পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের কে জানালেন আইসিটি কি ও আইসিটির ব্যবহার
সম্পর্কে।
এভাবে করে ধাপে ধাপে শ্রেণীভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করলে এরা শুরু থেকে
মজবুত হবে। তাই প্রাথমিক শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব অনেক বেশি
পরিমাণে রয়েছে। একটি সুশিক্ষিত ও মেধা সম্পন্ন জাতি গড়তে হলে তাদেরকে এই
শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা খুবই প্রয়োজন।
লেখকের মন্তব্য
প্রযুক্তিকে মানুষ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকে। যেমন শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কৃষি ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এরকম আরো অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকে। আধুনিক বিশ্বের প্রেক্ষাপটে শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার অন্তর্ভুক্ত করার বিকল্প নেই।তবে শিক্ষার মাধ্যমে কেবল প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব নয়, বরং তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ ঘটিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত মান উন্নত করতে হবে।
বিশেষ করে প্রযুক্তি ব্যবহারের কর্মমুখী শিক্ষা দেওয়া উচিত। তাহলে
শিক্ষার্থীদের মাঝে সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পাবে। আমাদের সকলের উচিত প্রযুক্তিকে
শুধুমাত্র সঠিক কাজগুলোতে ব্যবহার করা। কারণ প্রযুক্তিকে সঠিক কাজে ব্যবহার না
করলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তাই আসুন আমরা সকলেই দৈনন্দিন জীবনের তথ্য ও যোগাযোগ
প্রযুক্তিকে সঠিক কাজে ব্যবহার করি যেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যানে
আমাদের জীবন উন্নত হয়।
আর এস ড্রিমস ব্লগেনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url